তুরস্ক-গ্রিস সীমান্তে ঠাণ্ডায় ১৯ অভিবাসীর মৃত্যু, খোঁজ নেই অনেক বাংলাদেশির
তুরস্ক থেকে গ্রিসে পৌঁছা হলো না তাদের। তীব্র ঠাণ্ডা কেড়ে নিলো ১৯ অভিবাসীর প্রাণ। এই ঘটনায় গ্রিসকে দায়ী করেছে আঙ্কারা।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: তুরস্ক থেকে গ্রিসে পৌঁছা হলো না তাদের। তীব্র ঠাণ্ডা কেড়ে নিলো ১৯ অভিবাসীর প্রাণ। এই ঘটনায় গ্রিসকে দায়ী করেছে আঙ্কারা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এথেন্স। গত বুধবার ১২ জন ও বৃহস্পতিবার ৭ জন অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে তুরস্ক। ইনফোমাইগ্রেন্টস এর সূত্র বলছে- গত বুধবার তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তের কাছ থেকে ১২ জনের মরদেহের সন্ধান পাওয়ার কথা জানান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমা সোয়লু। এর পরদিন বৃহস্পতিবার এডির্নের প্রশাসন সেখানকার সীমান্ত এলাকা থেকে আরো সাত অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধারের তথ্য দেয়। সেখানকার গভর্নরের কার্যালয় থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঠাণ্ডায় জমে মারা যাওয়া অভিবাসীদের সংখ্যাটি দুর্ভাগ্যজনকভাবে বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটে দাবি করেছেন, বুধবার মোট ২২ জনের একটি অভিবাসী দলকে গ্রিস তাদের সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠায়। দেশটির সীমান্তরক্ষীরা এ সময় তাদের শার্ট ও জুতাও খুলে রেখে দেয়। এর ফলে তীব্র ঠাণ্ডায় ১২ অভিবাসী পথেই প্রাণ হারায়।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে গ্রিস। দেশটির অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি তুরস্কের দাবিকে ‘মিথ্যা অপপ্রচার’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘এই অভিবাসীরা কখনওই (গ্রিক) সীমান্তে আসেনি। তারা এসেছিল বা তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছিল এমন দাবি কা-জ্ঞানহীন।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করার বদলে তুরস্কের উচিত এই ধরনের বিপজ্জনক যাত্রা ঠেকাতে তার দায়িত্ব পালন করা।’ তবে এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার ইলভা জোহানসন বলেন, ‘আমি তথ্য পেয়েছি এবং আমি সত্যিই স্তম্ভিত।’ ইউরোপের ২৭ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের আগ মুহূর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি আরো বলেন, ‘এখানে গ্রিসের মন্ত্রী রয়েছেন, আমি বিষয়টি তার কাছে তুলব এবং এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইব। এটার অবশ্যই তদন্ত হতে হবে।’
এদিকে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটে দেয়া ঝাপসা ছবিতে রাস্তার পাশে অর্ধনগ্ন মরদেহগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়। ছবিগুলো তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলের ইপসালা শহরের সীমান্ত এলাকা থেকে তোলা বলে উল্লেখ করেন তিনি। অভিবাসীরা কোন দেশের সেটি জানাননি।
তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশিও রয়েছেন। আরো দু’জন বাংলাদেশি জীবিত ফিরে এসেছেন। এছাড়াও তুরস্ক থেকে গ্রিস প্রবেশের সময় কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায়। তাদের স্বজনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গ্রিসে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে তাদের ছবি প্রকাশ করে সন্ধান চাচ্ছেন। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং গ্রিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: