ড. ইউনূসের মামলার রায় আজ

রোববার দুপুর ২টায় শ্রম আদালতের বিচারক রায় ঘোষণা করবেন। গত ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন।

ড. ইউনূসের মামলার রায় আজ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের  বিরুদ্ধে  কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের দায়ের করা মামলায় আজ রায় ঘোষণা করবে আদালত। রোববার দুপুর ২টায় শ্রম আদালতের বিচারক রায় ঘোষণা করবেন। গত ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে- গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করা, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া। আইনে কারাদণ্ড দিলে ড. ইউনূসকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবেন। ড. ইউনূসের সর্বোচ্চ সাজা ও জরিমানা দাবি করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী। তিনি বলেন, শ্রম আদালতে মামলা শুরুর পর এই মামলাটি রায় পর্যন্ত পৌঁছাতে অন্যসব মামলার তুলনায় বেশি সময় লেগেছে। এই মামলা অনেক দ্রুতগতিতে পরিচালিত হয়েছে বলে তাদের আইনজীবীর অভিযোগ সত্য নয়। 

তবে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন মানবজমিনকে বলেন, মামলাটি বোয়িং বিমানের চাইতেও দ্রুতগতিতে পরিচালিত হয়েছে। ন্যায়বিচার হলে ড. ইউনূস বেকসুর খালাস পাবেন। তিনি আরও বলেন, কলকারখানার আইনজীবীরা মামলার অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। মামলা চলাকালীন সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে হাজির হয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন। ন্যায়বিচার দাবি করে তিনি আদালতকে বলেন, আমি যা করেছি সবই মানুষের জন্য করেছি। ব্যক্তিগত লাভের জন্য কোনো কিছু করিনি। আমি যে সমস্ত উদ্যোগ নিয়েছি কোনোটিতেই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য করিনি। সেটা গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা অন্য বড় কোনো প্রতিষ্ঠানই হোক। ড. ইউনূস বলেন, মানুষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে মুনাফা করার জন্য। আমরাও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে বড় করেছি। কিন্তু এসব কার্যক্রমকে আমরা সামাজিক ব্যবসা বলি। যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপকার হয়। এর মূল বিষয়টি হলো- এসব ব্যবসায় যিনি বিনিয়োগ করছেন তিনি কোনো মুনাফা নেবেন না। কাজেই আমি হচ্ছি এই সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা।

বিশ্বব্যাপী এটি আমি প্রচার করার চেষ্টা করেছি। এসব কার্যক্রমের ভেতরে আমার ব্যক্তিগতভাবে মুনাফা করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। মানুষের উপকার করাটাই আমাদের লক্ষ্য। কোনোটাতেই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবো- এ রকম কোনো উদ্দেশ্য আমাদের মধ্যে ছিল না। সুতরাং যেটার উদ্দেশ্য লাভবান হওয়া না সেটা আমি কার জন্য নেবো, কাকে দেবো? ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মালিকানা মুক্ত থেকেছেন দাবি করে ড. ইউনূস বলেন, আমার উদ্দেশ্য ছিল আমি মালিকানা মুক্ত থাকবো। সে জন্য কোনো কিছুতেই আমি মালিক হইনি। আমি সেটাই ফলো করে যাচ্ছি। যেখানে আমি নিজেই মালিকানামুক্ত থাকতে চাই- সেখানে আমি আরেকজনের কাছ থেকে কেড়ে আনবো কেন? ইউনূস ছাড়াও এ মামলার অপর তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। আদালতে তারাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।