জনগণের দৃষ্টি সড়াতে সরকার সাম্প্রদায়িক সংকট সৃষ্টি করেছে: বিএনপি
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার নিজেরাই এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সংকট সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
রবিবার রাতে ৮টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস,বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান,নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সভায় নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ১৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় মহাসচিব দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি সদস্যবৃন্দকে অবহিত করেন।
৩। সভায়, সনাতন ধর্মের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গোপুজার সময়ে কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন শরীফের অবমাননা এবং পরবর্তীতে শাসক শ্রেণীর মদদপুষ্ট দুষ্কৃতিকারীদের পূজামন্ডপে আক্রমণ, ভাংচুর এবং তারই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর, গাজীপুর, নোয়াখালীর চৌমহনী, চট্টগ্রাম, ঢাকায় পুলিশের নির্বাচারে গুলিবর্ষণ এবং নিরীহ পথচারী শিশুসহ কয়েকজনের মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার নিজেরাই এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সংকট সৃষ্টি করছে। প্রত্যেকটি ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে পরিস্থিতি জটিলতর হয়েছে।
সভা মনে করে, ক্ষমতাসীনরা তাদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘ স্থায়ী করার লক্ষে বিভাজনের রাজনীতি করছে। রাজনৈতিক দুরভিসন্ধির কারনেই এই রক্তপাত, লুঠতারাজ চলছে। সভা, সনাতন ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় এবং সকল ধর্মে মানুষের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করা হয়। অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানানো হয়। কোনও তদন্ত ছাড়াই বিএনপি এর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে বাড়ি-ঘরে পুলিশী তল্লাসী ও অভিযানের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে এই ধরনের অপকর্ম করা হচ্ছে বলে মনে করা হয়। সভায় এই ধরনের হীন অপকৌশলের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সভায় দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখার জন্য সকল নাগরিককে সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
সভায় উপদ্রুত এলাকা গুলোতে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ^র চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনা গুলোর তদন্ত করার জন্য সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যরিষ্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি দুটো অতিদ্রুত উপদ্রুত এলাকা গুলো সফর করে কেন্দ্রে প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৪। সভায় ইন্টারনেটসহ ডিজিটাল সকল মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সরকার ক্ষমতার যে অপপ্রয়োগ চালাছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। জনগণের মৌলিক অধিকার, স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখার আহ্বান জানানো হয়। এই বিষয়ে পরবর্তীতে কর্মসূচী গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৫। সভায় কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের মতামত এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের মতামতের সমন্বয়ে একটি সারমর্ম উপস্থাপনের জন্য মহাসচিবকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews