চীনের পথে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সেই রুশ জাহাজ

গত সপ্তাহে পণ্য খালাস না করেই ভারতের জলসীমা ত্যাগ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সেই রুশ জাহাজ।

চীনের পথে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সেই রুশ জাহাজ
চীনের পথে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সেই রুশ জাহাজ

প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশ এবং ভারতের বন্দরে নোঙর করতে না দেয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সেই রুশ জাহাজ উরসা মেজর এখন চীনের পথে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, এটি চীনের একটি বন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করছে। বেইজিংয়ের অনুমতি এবং লজিস্টিক সাপোর্ট পেলে রুশ জাহাজে থাকা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী চীনা বন্দরে খালাস এবং সেখান থেকে অন্য জাহাজে করে বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পণ্য খালাস না করেই ভারতের জলসীমা ত্যাগ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সেই রুশ জাহাজ। মোংলা পোর্টে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল খালাস করতে না পেরে ১৪ দিন জাহাজটি পশ্চিমবঙ্গের একটি বন্দরে নোঙরের অপেক্ষায় ছিল। কিন্ত ভারতও শেষ পর্যন্ত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজটি গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশ তো নয়ই।

এ নিয়ে রোববার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, রাশিয়া যে নিষেধাজ্ঞার জাহাজ পাঠাবে তা বাংলাদেশ আশা করেনি। জাহাজের পণ্য খালাস নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা রাশিয়াকে স্পষ্ট করে বলেছি, যে ৬৯ জাহাজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাতে পণ্য পাঠালে আমরা গ্রহণ করবো না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাজ্জব লেগেছে যখন শুনলাম নাম পরিবর্তন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজে করে পণ্য পাঠিয়েছে রাশিয়া।

মস্কোর কাছে আমরা তা কখনোই আশা করিনি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটি গত ২৪শে ডিসেম্বর মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তার আগে ২০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানতে পারে যে উরসা মেজর নামধারী জাহাজটি আসলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজ ‘স্পার্টা ৩’। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এক কূটনৈতিক পত্রে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। তাতে বলা হয়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ওই জাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানো, জ্বালানি সরবরাহ, জাহাজের নাবিকদের যেকোনো ধরনের সহযোগিতায় যুক্ত হলে ওই দেশের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া বা বড় আর্থিক দণ্ডের মুখে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।

এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথ্যটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানায় এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক জাহাজটির মোংলা বন্দরে প্রবেশের পূর্বানুমতি বাতিল করে। যদিও এ নিয়ে রাশিয়া কূটনৈতিক চিঠির মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এমনকি জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে দিতে বাংলাদেশের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে মস্কো। কিন্তু ঢাকা তাতেও রাজি হয়নি। এ অবস্থায় ফিরে গিয়ে জাহাজটি পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে নোঙর করার চেষ্টা করে। হলদিয়ার প্রবেশদ্বারে ১৪ দিন এটি অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু ভারতও তা ফিরিয়ে দেয়।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: