ঘরের মেঝেতে স্ত্রীর মরদেহ, রশিতে ঝুলছিল স্বামী 

  সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে শয়নকক্ষ থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ

ঘরের মেঝেতে স্ত্রীর মরদেহ, রশিতে ঝুলছিল স্বামী 

প্রথম  নিউজ, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে শয়নকক্ষ থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছে স্বামী।

শনিবার (১৩ মে) দিবাগত রাতের কোনো একসময় উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের চৌবাড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।


নিহতরা হলেন- চৌবাড়ি গ্রামের সবের মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২১) এবং তার স্ত্রী বেলকুচি উপজেলার তামাই কুঠিপাড়া গ্রামের নুরু শেখের মেয়ে নূরী খাতুন (১৯)।

স্থানীয়রা জানান, রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাত শফিকুল। এর আগেও দুইটি বিয়ে করে দুই স্ত্রীকেই তালাক দেন শফিকুল। নূরী ছিল শফিকুলের তৃতীয় স্ত্রী। তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ চলছিল।

নিহত শফিকুলের বাবা সবের মোল্লা জানান, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও শফিকুল ও নূরী ঘুম থেকে না উঠায় দরজায় ডাকতে থাকি। তখনও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা কেটে দেখি ছেলে শয়নকক্ষের ধর্ণার সঙ্গে ঝুলছে আর ছেলের বউ মেঝেতে পড়ে আছে। পরে ঘরের দরজা কেটে ছেলের মরদেহ নিচে নামাই। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

নিহত গৃহবধূ নূরী খাতুনের মা ফরিদা বেগম বলেন, বছরখানেক আগে পারিবারিকভাবে শফিকুলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিই। বিয়ের পর থেকে মেয়েকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানাভাবে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে পরিবার থেকে মেয়ে ও জামাই আলাদা হয়ে যায়। কয়েক দিন আগে মেয়ের শ্বশুরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হওয়ায় মেয়ে ও জামাই আমাদের বাড়িতে চলে আসে। পরে তাদের অনেক বোঝানোর পর তারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যায়। তিনি দাবি করেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কামারখন্দ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরনবী প্রধান জানান, কলহের জেরে শফিকুল তার স্ত্রী নূরীকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও সিআইডি বিষয়টি তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত শেষ হলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।