গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

চিফ কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে

গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

প্রথম নিউজ, ঢাকা : ভুল চিকিৎসায় জর্ডানের নাগরিক গালফ এয়ারের পাইলট মোহাম্মদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মৃত্যুর ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন অ্যান্ড ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে এ মামলা করেন নিহত পাইলটের বোন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা এলহেনডি জোসেফানো। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

মামলার বাদীর আইনজীবী সাব্বির আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গালফ এয়ারের পাইলট ফ্লাইট মোহাম্মদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দি বাংলাদেশে আসার পর অসুস্থ হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় তিনি মারা যান। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। তাই আমরা আজ আদালতে মামলা করেছি।

আরও পড়ুন : ইউনাইটেড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় বিদেশি পাইলটের মৃত্যুর অভিযোগ

গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা এলহেনদি অভিযোগ করেন, রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় তার ভাই ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মৃত্যু হয়েছে।

ইউনাইটেড হাসপাতালে ইউসুফকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি দাবি করে তালা এলহেনদি বলেন, ভোর পৌনে ৬টায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে দ্বিতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর তাকে ১০ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয়। রিটার্ন অব স্পনটেইনাস সার্কুলেশন (আরওএসসি) ও ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রামের (এসিজি) পর রিপোর্টে দেখা গেছে, তার একটি অংশ ফুলে গেছে। সকাল পৌনে ৭টায় তার তৃতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় এবং আরওএসসির সঙ্গে ১৫ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয়। বেলা সোয়া ১১টায় ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রমের মধ্যেই আমার ভাইয়ের চতুর্থ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। তাকে ৪৫ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয় এবং টেম্পোরারি পেসমেকার (টিপিএম) বসানো হয়। দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে আমার ভাই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সময় তাকে ওষুধ প্রয়োগ করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমার ভাইয়ের চিকিৎসা করেছেন ডা. কায়সার নাসির। কিন্তু আমার ভাইয়ের পরিবারের কাছে চিকিৎসার যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে তার নাম পাওয়া যায়নি।

তালা এলহেনদি বলেন, ফোনে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। ভোর ৪টা ৮ মিনিট থেকে ১২টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা সময় পেয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এসময়ের মধ্যে তারা আমার ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে পারতেন, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, ইমার্জেন্সি রুমের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানতেন যে এক ঘণ্টারও বেশি সময় আগে আমার ভাইয়ের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে এবং তার রক্তচাপ কমে যাওয়ায় সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। কিন্তু তারা কোনো কার্ডিওলজিস্টকে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সেখানে কোনো হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। শ্বাসনালী সুরক্ষার জন্য আমার ভাইকে টিউব পরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইমার্জেন্সি রুমের কর্মকর্তারা। কোনো কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ ছাড়াই, ১৫ মিনিটের মধ্যে আমার ভাইকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: