গ্রেপ্তার ও তল্লাশির সময় পুলিশকে পরিচয় দিতে হবে

গ্রেপ্তার ও তল্লাশির সময় পুলিশকে পরিচয় দিতে হবে

প্রথম নিউজ, ঢাকা : কারো বাড়িতে পুলিশ হাজির হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই অবিশ্বাস ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যে প্রকৃত পুলিশ এসেছে কি না। পুলিশের পরিচয় না দিয়েই আসামি ধরা এবং তল্লাশি চালানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যার সমাধানে সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। কমিশন বলেছে, কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার ও তল্লাশির সময় পুলিশকে পরিচয় দিতে হবে।

পরিচয় দিতে না চাইলে বা সার্চ ওয়ারেন্ট না থাকলে সেই পুলিশ প্রকৃত পুলিশ কি না তা যাচাইয়ের জন্য জরুরি কল সার্ভিস চালু করতে হবে। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের কাজে উৎসাহিত করতে ‘ওভার টাইম’ মজুরির ব্যবস্থা করার কথাও বলেছে কমিশন। বিসিএস পুলিশ ক্যাডারেও সংশোধনী আনার সুপারিশ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি দেওয়াকে অপচর্চা বলে মনে করে কমিশন।

গত ৩ অক্টোবর পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত বুধবার পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাঁদের প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে পুলিশ সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে ১০৭টি সুপারিশ করেছে।

সুপারিশে বলা হয়, অতিরিক্ত কাজের চাপ কমানোর জন্য পুলিশের কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট রাখতে হবে।
আট ঘণ্টার অতিরিক্ত কাজ করালে বিশেষ প্রণোদনা চালু করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুলিশ অতিরিক্ত কাজ করার পর ওভারটইম মজুরি পেলে তারা কাজের প্রতি উৎসাহিত হবে। দুর্নীতির দিকে এগোবে না। এ জন্যই এ ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে।’

সুপারিশে বলা হয়, অভিযান পরিচালনার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের কাছে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম ও ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইসসহ ভেস্ট-পোশাক পরিধান করতে হবে।
রাতের বেলা গৃহে তল্লাশি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি অথবা স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। কেইস ডায়েরি আদালতে দাখিল করে আদালতের আদেশ ছাড়া কোনোক্রমেই এফআইআরবহির্ভূত আসামি গ্রেপ্তার করা যাবে না।

আরেকটি সুপারিশে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দেওয়ার অপচর্চা পরিহার করতে হবে। কোন পুলিশ সদস্য যদি উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে কাউকে এ ধরনের মামলায় হয়রানি করে, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারপ্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়ার সামনে কাউকে অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না।

অপচর্চার বিষয়ে মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই অজ্ঞাতনামা আসামির নামে যাকে তাকে ধরে আনা হয়। পরে সেটা দিয়ে বাণিজ্য চলে। এই বাণিজ্য রোধের জন্যই এমন সুপারিশ করা হয়েছে।’

আরেকটি সুপারিশে বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সরাসরি সব পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা বা তাদের প্ররোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাপ্রধান নিজেই যাতে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান কার্যালয়েও একটি মানবাধিকার সেল কার্যকর করতে হবে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে যুক্তরাজ্যের একদল এমপির দেওয়া প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়ে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠার পর এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা। গতকাল রবিবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।

যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথবিষয়ক অল–পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এএপিজি) গত নভেম্বরে ওই প্রতিবেদন দেয়।
তাতে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করা হয়। ওই প্রতিবেদনে উল্লিখিত অনেক তথ্য সঠিক নয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

সেখানে অভিযোগ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সাংবাদিক ও সাবেক কর্মকর্তাদের দমন করতে দেশের আইন ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি ইসলামি উগ্রপন্থিদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবও তুলে ধরা হয় তাতে।

ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের বরাতে রবিবার গার্ডিয়ান লিখেছে, প্রতিবেদনটি আর বিতরণ করা হচ্ছে না। লেবার পার্টির একজন এমপি হাউস কমন্সে অভিযোগ জানানোর পর এটি ‘পর্যালোচনা’ করে দেখা হচ্ছে। তবে সেই প্রতিবেদন কবে প্রত্যাহার করা হয়েছে গার্ডিয়ানের রোববারের খবরে তা বলা হয়নি।

এপিপিজির এক মুখপাত্র গার্ডিয়ানকে বলেন, এটি একটি প্রশ্নবিদ্ধ প্রতিবেদন।
এটি বর্তমানে পর্যালোচনাধীন একটি অভ্যন্তরীণ নথি। বৃহৎ পরিসরে আলোচনার অংশ হিসেবে বিষয়টি পররাষ্ট্র দপ্তরকেও জানানো হয়েছে। এটি বাইরে প্রকাশ করা হবে না এবং এই বিষয়ে এপিপিজি কোনো ফলোআপও করবে না।

গার্ডিয়ান লিখেছে, শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে ব্রিটেনের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে অভিযোগ উঠেছে, ব্রিটিশ রাজনীতিতেও আওয়ামী লীগ হস্তক্ষেপ করছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি’ শিরোনামে এপিপিজির প্রতিবেদনটি সংবাদমাধ্যমে আসে গত নভেম্বরে; শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রায় তিন মাসে পরে। ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা চালান। এতে প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

প্রতিবেদনটিতে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের ‘একগুচ্ছ’ সমালোচনা করা হয়। ওই সময় প্রতিবেদনের সঙ্গে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এপিপিজির সভাপতি ও কনজারভেটিভ পার্টির নেতা অ্যান্ড্রু রোসিনডেল। সেখানে তিনি বলেছিলেন, শুধু বর্তমান সরকারের সমর্থনকারীকে নয়, বাংলাদেশের উচিত দেশের সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া। শিগগিরই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন না ঘটলে নতুন সরকারের আন্তর্জাতিক সমর্থন অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।

এপিপিজির প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছিল, ইউনূস সরকার আইনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে এবং কট্টর ইসলামপন্থিদের ক্ষমতায়ন ঘটাচ্ছে।

প্রতিবেদনটির বিষয়ে গার্ডিয়ান লিখেছে, প্রতিবেদনটি তারা মূলত পেয়েছে দিল্লিভিত্তিক থিংক ট্রাংক ‘রাইটস অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালাইসিস গ্রুপের’ মাধ্যমে।

এতে ব্রিটিশ এমপিরা বলেন, আমরা তথ্যপ্রমাণ পাচ্ছি যে, বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের নেতা, সাবেক বিচারক, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এত এত মামলা দেওয়া হচ্ছে, যা বর্তমান সরকারের গ্রহণযোগ্যতে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

যদিও এর সমালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিহত আন্দোলনকারীর সংখ্যা প্রতিবেদনে কম দেখানো হয়েছে এবং বেশির ভাগ মৃত্যু শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে ঘটেছে বলে এতে তুলে ধরা হয়।

এপিপিজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বেশিরভাগ মৃত্যুই ঘটে ৫ আগস্টের পরে, যখন পুলিশের সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং গত সরকারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে লাখ লাখ মানুষ রাজপথে পথে নেমে আসে।

গার্ডিয়ান লিখেছে, এই তথ্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনের সাংঘর্ষিক। গত আগস্টে কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়— হতাহতের বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে।

এপিপিজির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের নতুন সরকার এক লাখ ৯৪ হাজার মানুষকে অভিযুক্ত করেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের কাছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে, এই সংখ্যা সম্ভবত তাদেরকে বোঝানো হয়েছে। এটা অভিযুক্তের সংখ্যা নয়।

গার্ডিয়ানের রবিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে আসা লেবার পার্টির এমপি রুপা হক এপিপিজির প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। রুপা হক দাবি করেন, ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে প্রতিবেদনের প্রসঙ্গটি তোলেন এবং জিজ্ঞাসা করেন, আপনার সরকার এগুলো কী করছে, পার্লামেন্টের নামে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।

লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিসের অধ্যাপক নাওমি হোসাইন গার্ডিয়ানকে বলেন, প্রতিবেদনে বড় ধরনের ত্রুটি রয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে ন্যূনতম যাদের জ্ঞান আছে, তারা এগুলো ধরে ফেলবে। এটা হয় পক্ষপাতদুষ্ট, নয়ত খুবই দুর্বল একটি বিশ্লেষণ।

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তি উপলক্ষে, চীন আগামী মার্চে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ২৭-২৮ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিতব্য বাও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দিতে ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। 

এই ফোরামে এশিয়া ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে বিভিন্ন দেশের নেতা, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষাবিদরা অংশ নেন। বেইজিং সফরে যাওয়ার ফাঁকে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করতে আগ্রহী।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ সোমবার চীন যাচ্ছেন, এবং ২১ জানুয়ারি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুই দেশের সহযোগিতা আরো বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার দিকে নজর দেওয়া হতে পারে, যেমন চীনের সহায়তায় বাংলাদেশে মৈত্রী হাসপাতাল স্থাপন এবং কুনমিংসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশের রোগীদের জন্য কম খরচে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা।

চীন বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীসহ নানা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী।
২০১৬ সালে সই হওয়া তিস্তা পানির ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমঝোতা স্মারক নবায়নের বিষয়টি আগামী বৈঠকে আলোচনা হবে। এছাড়া, চীন তিব্বতে মেগা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যার ফলে ভাটির দেশগুলোর পানির প্রাপ্যতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের কাছে সুদের হার কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনার এবং ঋণ সম্পর্কিত ফি বাতিল করার আবেদন জানানো হবে।
এছাড়া, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ, এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে রোহিঙ্গাদের পক্ষে থাকার আহ্বান জানাবে।

এদিকে, চীন বাংলাদেশকে আরো বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছে। ৫ আগস্টের পর চীন বাংলাদেশে ২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং দেশের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে আরো সহযোগিতা প্রস্তাব করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা আরো তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব থাকবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, দুই দেশের সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে, এবং বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতায়।

চার দিনের সরকারি সফরে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার (২০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত একটার দিকে সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি। সম্মেলন শেষে ২৫ জানুয়ারি দেশে ফিরবেন।

গতকাল রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

তিনি বলেন, সম্মেলনে অংশ নেওয়া ছাড়াও দাভোসে ফোরামের সাইডলাইনে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড ছাড়াও কয়েকটি সংস্থা প্রধান, বিভিন্ন কম্পানির প্রধান নির্বাহী এবং চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা রয়েছে ড. ইউনূসের।

উপ-প্রেস সচিব বলেন, সম্মেলনে বাংলাদেশ বিষয়ে আলাদা একটি সংলাপ হবে।
দেশের বিনিয়োগের পরিবেশ সম্পর্কে সেখানে একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের প্রতি নজর দিতে আহ্বান জানানো হবে।