গৌরনদীতে দুলাল চন্দ্র হত্যা: পিবিআই'র অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি

পরিবারের জোরাজুরিতে ঘটনার প্রায় ১৮ দিন পর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে কেন এবং কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- তার উত্তরও মেলেনি সংস্থাটির দেওয়া অভিযোগপত্রে।

গৌরনদীতে দুলাল চন্দ্র হত্যা: পিবিআই'র অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি
নিহত দুলাল চন্দ্র সিকদার

প্রথম নিউজ, বরিশাল: ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বরিশালের গৌরনদীর পূর্ব চর সরিকল গ্রামের নিজ বাড়ির রান্নাঘর থেকে উদ্ধার করা হয় দুলাল চন্দ্র সিকদার (৬৮) নামে এক বৃদ্ধের লাশ। তিনি বাড়িটিতে একাই বসবাস করতেন। রক্তাক্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। এ নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলাও হয়। তবে পরিবারের জোরাজুরিতে ঘটনার প্রায় ১৮ দিন পর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তবে কেন এবং কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- তার উত্তরও মেলেনি সংস্থাটির দেওয়া অভিযোগপত্রে। এছাড়াও অভিযুক্ত আসামিদের ছাড় দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ইতোমধ্যে অভিযোগপত্রে থাকা দুই আসামির মধ্যে একজন জামিনে বের হয়ে মামলার বাদীকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। মূলত এলাকার একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী দুলাল চন্দ্রের সম্পত্তি দখলের জন্য পরিকল্পনা করে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে পারে বলেও ধারণা তাদের।  দুলাল চন্দ্র সিকদারের স্ত্রী-সন্তানও থাকেন ভারতে। সেখানে তার সন্তানরা লেখাপড়া করেন। সাবেক এই ব্যবসায়ীর পাঁচ ভাই ও দুইবোনের মধ্যে ছিলেন মেজো। তার সেজো ভাই অনুপ সিকদার ভারতে থাকতেন, সেখানেই তিনি মারা গেছেন। অন্য তিন ভাই চাকরির সুবাদে বাড়ির বাইরে থাকেন। তার দুই বোন বিবাহিত, তারা স্বামীর সঙ্গে থাকেন।

দুলাল চন্দ্র সিকদার ভারত ও বাংলাদেশে নিয়মিত যাওয়া-আসা করতেন। তাদের বাড়ির সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন। বাড়িতে হানিফ ফকির (৬৫) নামে একজন কেয়ারটেকার ছিলেন। দুলাল চন্দ্রের অবর্তমানে তিনিই সবকিছু দেখাশোনা করতেন। আর দুলাল চন্দ্র বাড়িতে এলে প্রতিবেশী নন্দ রানী ঘরামী (৬৩) ও সান্ত্বনা মজুমদার (৪৫) তার রান্নাবান্নার কাজ করে দিতেন। দুলাল চন্দ্র সিকদারের ছোট ভাই বাবুল চন্দ্র সিকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ২০২০ সালের জুনে করোনা মহামারিতে ভারত থেকে বাড়িতে আসেন তার ভাই। সেসময় করোনার তীব্রতার কারণে তিনি বাড়িতেই থাকতেন।

লাশ উদ্ধারের দিন রান্নাঘরের রক্তাক্ত মেঝে লুঙ্গি দিয়ে মোছা ছিল। তার মুখেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নিহত দুলাল চন্দ্র সিকদারের মোবাইল ফোনটিও তখন পাওয়া যায়নি। এছাড়া জমির দলিল ও টাকাও খোয়া যায় এবং বাড়ির দরজাও খোলা পাওয়া যায়। এত আলামত থাকার পরও পুলিশ এটিকে শুরুতে হত্যাকাণ্ড বলতে চায়নি। তারা একটি অপমৃত্যুর মামলা নেয়। ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ, হত্যাকাণ্ড সন্দেহ করা হলেও তখন পুলিশের ইচ্ছাতেই অপমৃত্যুর মামলা করতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা।

অপমৃত্যুর মামলার ১৮ দিন পর নিহতের পরিবারের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হলে দুলালের ভাই অশোক সিকদার গৌরনদী থানায় গিয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। সেই এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে বাড়ির কেয়ারটেকার হানিফ ফকির ওই বাড়িতে আসেন। দুলাল চন্দ সিকদারকে ডাক দিয়ে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি জানালা দিয়ে দেখতে পান, রান্নাঘরে উপুড় হয়ে পরে আছেন দুলাল চন্দ্র। বাড়ির পেছনের দরজাটি খোলা। এমন দৃশ্য দেখে হানিফ ফকির স্থানীয় সুরেন সিকদার বাজারে গিয়ে কয়েকজনকে বিষয়টি জানান। তাদের নিয়ে বাড়িতে আসেন। তারা এসে দেখতে পান, দুলাল চন্দ্র সিকদারের নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।

পরে গৌরনদী থানা পুলিশ দুলাল চন্দ্র সিকদারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করতে বরিশাল শেরেবাংলা নগর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় এবং গৌরনদী থানা পুলিশ ওইদিনের প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তিকে দিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা নেয়। দুলাল চন্দ্র সিকদারের মুখে ও মাথায় আঘাত থাকলেও কেয়ার টেকার হানিফ ফকিরসহ আরও কিছু স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানায়, তার প্রেশার ছিল, তিনি নিয়মিত প্রেশারের ওষুধ সেবন করতেন। প্রেশারের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সবার কথা শুনে অপমৃত্যুর মামলা নেয়।

বরিশাল জেলা পিবিআই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমে পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান তদন্ত শুরু করেন। তিনি তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হয়ে ২০২১ সালের ১০ মার্চ কালাম ওরফে কালাম দালাল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তার বাড়ির রান্নাঘরের ছাইয়ের ভেতর থেকে দুলাল চন্দ্রের মোবাইলের পোড়া অংশ উদ্ধার করা হয়। একই বছরের ১৩ মার্চ কালামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বপন জোমাদ্দার ও মোমিন আকন নামে আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের বদলি হলে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় এসআই প্রতুল কুমার শীল। ২০২২ সালের ১৩ মার্চ ঘটনার একবছর পর আদালতে কামাল দালাল ও স্বপন জোমাদ্দারকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন। তারাই দুলাল চন্দ্রকে পরিকল্পনা করে হত্যা করে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।

অভিযোগপত্রে যেসব তথ্য উঠে আসেনি: অভিযোগপত্রে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। তবে হত্যার কারণ কিংবা এর সঙ্গে আর কে কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল- সেই বিষয়গুলো আনা হয়নি। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে হলে যা খুবই প্রয়োজন।

জানা গেছে, দুলাল চন্দ্র সিকদারের কাছ থেকে এলাকার মানুষ সুদে টাকা নিতো। কারা কত টাকা নিতেন তা একটি রেজিস্টার খাতায় লিখে রাখা হতো। দুলাল চন্দ্রের অনুপস্থিতিতে যা বাড়ির কেয়ারটেকার হানিফ ফকির দেখভাল করতো। সে-ই টাকা তুলতো। সেই রেজিস্টার খাতাটি পাওয়া যায়নি। এছাড়াও জমির দলিল, নগদ টাকাও বাড়ি থেকে নিয়েছে হত্যাকারীরা, যা উদ্ধার হয়নি। এসব দলিল ও টাকা কার কাছে আছে, তা তদন্তে উঠে আসেনি। গ্রেফতারের পর কোনও আসামিকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়নি। কোনও আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়নি।

কালাম দালালের দেওয়া তথ্যে স্বপন ও মোমিন আকনকে গ্রেফতার করা হলেও অভিযোগপত্র থেকে মোমিন আকনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মোমিন আকনকে গ্রেফতারের পর আদালতে যে ফরোয়ার্ডিং দিয়েছে সেখানে তার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেছে পুলিশ। তবে তদন্ত শেষে তাকে মামলা থেকেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তথ্য ছিল হানিফ ফকিরের কাছে: বাড়ির কেয়ার টেকার হানিফ ফকির দুলাল চন্দ্র সিকদারের টাকা পয়সা, জায়গা জমিসহ সকল কিছু দেখভাল করতো। চার্জশিটে থাকা আসামিদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। নিহতের পরিবার শুরু থেকেই হানিফ ফকিরকে গ্রেফতারের দাবি করলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। পরিবার বলছে, অথচ এলাকায় সুদে লাগানো লাখ-লাখ টাকার তথ্য জানতো হানিফ ফকির। এমনকি হানিফের ভাই হারুন ফকিরকেও অর্থ সহায়তা করতেন দুলাল চন্দ্র সিকদার। তিনি খুনের শিকার হওয়ায় সেসব টাকা আর ফেরত দিতে হয়নি। নিহতের ভাই বাবুল সিকদার বলেন, ‘আমার ভাই খুন হওয়াতে তারা লাভবান হয়েছে, তবে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। উল্টো তাকে সাক্ষী বানানো হয়েছে।’

দুলাল চন্দ্র সিকদারকে হত্যার আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র চার দিনে কেয়ারটেকার হানিফ ফকির, হিমু (স্থানীয় এক ব্যক্তি) ও অভিযোগপত্রে থাকা স্বপন জোমাদ্দারের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বার মোবাইল ফোনে কথা হয়। অভিযোগপত্রে স্বপন জোমাদ্দারের নাম আসলেও এই বিষয়টিও আমলে নেয়নি তদন্ত কর্মকর্তা।

অভিযোগপত্র নিয়ে পরিবারের নারাজি: পিবিআই-এর দেওয়া অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়েছেন মামলার বাদী অশোক সিকদার। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই হানিফ ফকিরের আচরণ ছিল সন্দেহজনক। সে যেভাবে লাশ দেখার পর স্বাভাবিকভাবে বাজারে গিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে বলেছে। সে এসব খুব স্বাভাবিকভাবে করেছে। অথচ সে দীর্ঘদিন কেয়ারটেকার ছিল, লাশ দেখার সঙ্গে সঙ্গে সে চিৎকার দিয়ে মানুষ না ডেকে হেঁটে-হেঁটে বাজারে যায়; যা সন্দেহজনক। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা গামছাও আলামত হিসেবে সংগ্রহ করেনি পুলিশ।’

পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, স্বপন ও কালাম দালাল প্রথমে চড়থাপ্পড় মারেন, এরপর মাথায় আঘাত করেন। কিন্তু কী দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন তা উল্লেখ নেই। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দুলাল শিকদারের মাথার ভেতরে মস্তিষ্কে মারাত্মক ইনজুরি ছিল। 

ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে দুলাল চন্দ্রের বাড়ির পূর্ব-দক্ষিণ পাশে পানের বরজের পাহারাদার শ্যামল মণ্ডল অভিযুক্ত কালাম দালাল, স্বপন জোমাদ্দার, মোমিন আকনসহ আজাহার ও এখলাস নামে আরও দুই জনকে একসঙ্গে হেঁটে যেতে দেখেন। এই বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানালেও এবিষয়ে তিনি গুরুত্ব দেননি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করেননি। এই পাঁচ জনের মধ্যে অভিযোগপত্রে শুধু কালাম দালাল ও স্বপন জোমাদ্দারের নাম আছে। এছাড়াও নিহতের পরিবার জানিয়েছে, কেয়ারটেকার হানিফ ফকির নিহত দুলাল সিকদারের সুদের টাকার হিসাব নিকাশ ও সংরক্ষণ করতো। এ নিয়ে হানিফ ফকির ছোটভাই হারুন ফকিরের সঙ্গে দুলাল সিকদারের কয়েকবার ঝগড়া হয়েছিল। সুদের টাকা আত্মসাৎ করার জন্যও এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে নিহতের ভাই বাবুল সিকদার সন্দেহ করেন।

হত্যার কারণ হিসেবে স্বপন জোমাদ্দারের কাছে দুলাল শিকদারের গাছ বিক্রির প্রসঙ্গে কথা চার্জশিটে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিক্রির জন্য স্বপনকে গাছ দেখানোর পর দামে বনিবনা না হওয়ায় অন্য একজনের কাছে তা বিক্রি করে দেন দুলাল সিকদার। তবে কতগুলো গাছ, অন্য কার কাছে বিক্রি করেছেন- তার উল্লেখ নেই অভিযোগপত্রে। নিহত দুলাল শিকদারের ভাই বলছেন, তার ভাই কোনও গাছ বিক্রি করেনি। আর স্বপন নিজেও গাছ ব্যবসায়ী না। ঘটনার প্রায় একবছর আগে অনেকগুলো গাছ বিক্রি করেছিলেন তার ভাই। মনির বেপারি নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে। তখন দৃশ্যপটে স্বপন ছিলই না।

পিবিআই’র বক্তব্য: পিবিআই বরিশাল জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘থানা পুলিশ মামলাই নিতে চায়নি। আমরা তাদের অনুরোধ করে মামলাটা করিয়েছি। এরপর আমরা মামলা তদন্ত করেছি। দুই জন আসামির সম্পৃক্ততা পেয়েছি। নিহত দুলাল শিকদারের হত্যার রহস্য উদ্ধার করেছি। একজন আসামির ভাবির জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রের অন্যান্য ত্রুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যা যা পেয়েছেন, তা অভিযোগপত্রে দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে ভালো তদন্ত আর হয় না। তবে আসামি কালাম দালাল দুর্ধর্ষ অপরাধী। সে জানে আদালতে স্বীকার করলে কী হবে, তাই তারা কেউ স্বীকারোক্তি দেয়নি।’

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom