গণযুদ্ধ ছাড়া স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানো যাবে না : আ স ম আবদুর রব

বাংলাদেশে জনগণের আরেকটা গণযুদ্ধ ছাড়া স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব

গণযুদ্ধ ছাড়া স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানো যাবে না : আ স ম আবদুর রব
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, ছবি-সংগৃহীত

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশে জনগণের আরেকটা গণযুদ্ধ ছাড়া স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেন, আজকে অধিকাংশ জনগণ এই স্বৈরাচারী সরকারের বিপক্ষে। জনগণের মনে ক্ষোভ, দুঃখ, ব্যথা-বেদনার যন্ত্রণা আছে। মানুষ এই সরকারের পরিবর্তন চায়। পৃথিবীর কোন শক্তি নাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে সেই সরকারকে পরাজিত করবে। বাংলাদেশে তো সম্ভবই নয়। আরেকটা গণযুদ্ধ না করে জনগণের ক্ষমতা, অধিকার, কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘আকাঙ্খিত বাংলাদেশ: বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনায় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে সভার শুরুতে আলোচিত বিষয়ের ওপর প্রস্তাবনা পাঠ করেন তিনি।

ক্ষমতার পরিবর্তন ও গণমুখী রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রবর্তনে সংবিধান সংস্কার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকারের নিশ্চয়তা, রাষ্ট্র মেরামত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন- এ পাঁচটি মৌলিক প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বানও জানান আ স ম আবদুর রব। আবদুর রব বলেন, পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশেই ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহি করার মতো সংবিধান আছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা সংবিধানে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারিনি। আমাদের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহির কোনও জায়গা রাখা হয়নি। ন্যায়পাল নিয়োগের কথা থাকলেও তা কখনও বাস্তবতার মুখ দেখেনি। এ কারণে সংবিধান সংশোধন না করে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করা যাবে না এবং দেশে শান্তিও আসবে না।

লিখিত বক্তব্যে জেএসডি সভাপতি বলেন, সরকার ক্ষমতা ও মৃত্যু সমকক্ষ করে ফেলেছে। ‘হয় ক্ষমতা’ নয় ‘মৃত্যু’-এটা যে সরকারের প্রতিজ্ঞা সে সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে তা বিশ্বাস করা হবে নির্বোধের কাজ। আওয়ামী লীগের এই জিঘাংসমূলক রাজনীতি, বিদ্বেষমূলক রাজনীতি সমগ্র সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে একটা অযৌক্তিক ন্যায্যতাবিহীন সংস্কৃতির বিস্তার করছে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচনে নির্বাচিত হবে এটা আওয়ামী লীগ মেনে নিতে পারে না। বিরোধী দলে থাকলে নির্দলীয় সরকার এবং সরকারে থাকলে দলীয় সরকার -আওয়ামী লীগের এই ডিগবাজির রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রাজনীতির প্রতি মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাসকে নস্যাৎ করে দিয়েছে।

আলোচনা সভায় গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ বলেন, শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় থাকার কারণে আজকে আমলাদের দিয়ে জনগণকে কৃতদাস করা হয়েছে। এই কৃতদাস থেকে জনগণ যে দেশের মালিক যা সংবিধানে আছে তা আদায় করতে হবে। অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। আর দানবীয় অধিকার তো কাউকে দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা একটা সমৃদ্ধ সুখী জীবন চাই। যে জীবন আমাদের মুক্ত করবে, কথা বলতে দেবে। সুখকে অনেক দেশ উন্নতির মাপকাঠি মনে করে। কিন্তু আমাদের ঘাড়ে সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো কেউ চেপে বসেছে। এর করণীয় হচ্ছে এ ভূতকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এর সাথে কোন আপোষ করা যাবে না। অতএব গণতন্ত্রের জন্য এবং উন্নত জীবন ও সুখের জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার যাওয়ার বিকল্প হচ্ছে নতুন একটা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। কাজেই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তার অধীনে কোন নির্বাচন নয়। যারা এটা করবেন তারা জনগণের সাথে বেইমানি করবেন।  সভায় আরও বক্তব্য দেন জেএসডির কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম ও জেএসডির স্থায়ী কমিটির সদস্য তানিয়া রব প্রমুখ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom