গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে আইভি বাংলো তৈরির সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়। চিঠির স্মারক নম্বর- ২৫.০০.০০০০.০৫৩.০০১.০০২.১৯.২৭১। অভিযোগটি গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসানকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে মুহাম্মদ সোহেল হাসান গত ২১ আগস্ট গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে আইভি বাংলোতে পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মিরপুর পাইকপাড়াস্থ পিডব্লিউডি ট্রেনিং সেন্টার (পুরাতন) এর ২য় তলার সিড়ির পূর্ব পাশের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত কক্ষ নম্বর ৭ ও ৮ দুটি কক্ষকে আইবি বাংলোতে রূপান্তরের লক্ষ্যে সংস্কার/মেরামত ও আধুনিকায়ন কাজের জণ্য ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বরাদ্ধকৃত অর্থ ইতোমধ্যে উত্তোলনপূর্বক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ওই ৭ ও ৮ নম্বর কক্ষে কোনো সংস্কার/মেরামত বা আধুনিকায়নের কাজ করা হয়নি। তবে ৭ নম্বর কক্ষে দুই শ্রমিককে তড়িঘড়ি করে ডেকোরেশনের কাজ শুরু করতে দেখা গেছে। তখন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে কোনো কাজ না করার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু গোপনে উক্ত সংস্কার/মেরামত কাজ হচ্ছে বলে বিশ^স্থ সূত্রে খবর পাওয়া যায়। যা তদন্তকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির শামিল।
পরবর্তীতে ওই দুটি কক্ষে যেনো কোনো সংস্কার/মেরামত কাজ না করতে পারে সেজন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সংস্থাপন) আহমেদ আব্দুল্লাহ নূর ও নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম) পবিত্র কুমার দাশ এর সহযোগীতায় উক্ত কক্ষ দুটিতে সিলগালা করার নির্দেশ দেন। যা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব (উন্নয়ন অধিশাখা-০৯) মো. মাহমুদুর রহমান হাবিবকে অবহিত করা হয়।
এদিকে কক্ষ দুটি সিলগালা করার একদিন পরই আজ বৃহস্পতিবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠিতে ওই কক্ষ দুটির সিলগালা খুলে দেয়া নির্দেশ দেন।
অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুজ্জামান চুন্নু প্রভাব খাটিয়ে এক দিনের মধ্যেই সিলগালা খুলে ফেলেছে। এবং তড়িঘড়ি করে শুরু হওয়া ডেকোরেশনের কাজ আবার চালাচ্ছেন। জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে থাকাকালীন বদলি হওয়ার আগমুহূর্তে অর্থ উত্তোলন করে এই সাইফুজ্জামান চুন্নু। বর্তমানে মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে দায়িত্বে আছেন রাশেদ আহসান। 
একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে এই অর্থ আত্মসাৎই নয়, সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ। 
এবিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সংস্থাপন) আহমেদ আব্দুল্লাহ নূর এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাকে এবিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে ঠিকই। তবে এষিয়ে আমি কিছু জানি না।
নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম) পবিত্র কুমার দাশ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাকে এর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল ঠিকই। তবে আমি ঢাকার বাইরে থাকায় আমার পরিবর্তে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে আমি কিছু জানি না।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, এবিষয়টা নিয়ে সচিব স্যারের সাথে কথা বলতে পারেন। আমিতো সচিব স্যারের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে পারি না। একদিনেই সিলগালা খুলে দেয়া হলো কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে পার্পাসে সিলগালা করা হয়েছে সেই পার্পাস সার্ভ হয়েছে। অর্থ আত্মসাতে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিপোর্ট সচিব স্যারের কাছে সাবমিট হয়েছে ওইটা কমপ্লিট হলে জানা যাবে অর্থসাৎ প্রমানিত নাকি প্রমানিত না।