গণতন্ত্র ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাশে থাকার আহ্বান ফখরুলের

গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবাসন কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

গণতন্ত্র ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাশে থাকার আহ্বান ফখরুলের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং ভোটের অধিকার ফেরানোর জন্য জনগণের পাশে থাকতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবাসন কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া সেমিনারে ইউএস, ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএস এইড, ইউকেএইড, জাইকা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মান, ইরান, সুইডেন, নেদারল্যান্ডসহ ১৫টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

সভাপতির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যেটা চাই, এই সরকারকে অতি দ্রুত সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটা নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে দেয়া। আমি কথা বলতে পারবো না, আমি বিচার পাবো না, আমি আমার নিরাপত্তা রক্ষা করতে পারবো না। আমি স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা পাবো না। এটা হতে পারে না। সেজন্য আজকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, কমিউনিটি এবং জনগণের কাছে আহ্বান জানাবো, আসুন আজকে বাংলাদেশের মানুষকে তার গণতন্ত্র এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে তার পাশে দাঁড়াই। 

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, নিউইয়র্ক টাইমস পরিষ্কার করে বলেছে যে, ধীরে ধীরে গোপনে নীরবে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এটাই সত্য। তিনি বলেনআজকে এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আনতে হবে। আসুন সবাবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ দানব থেকে নিজেকে মুক্ত করি দেশের মানুষকে মুক্ত করি, মুক্ত সমাজ গড়ে তৈরি এবং আমরা বাংলাদেশের মুক্তি প্রতিষ্ঠা করি। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী ও অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে প্রায় ১৬০ জন্য বিশ্ব নেতা বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের এই বিবৃতির বিপক্ষে ৫০ জন সম্পাদক একটা বিবৃতি দিয়েছেন। আমাকে সাংবাদিকরা বললেন, এটা ভুয়া। কেউ এখানে সই করেন নাই। এখন তারা কথা বলতে পারছেন না এজন্য যে, কথা বললে আবার তারা বিপদে পড়বেন। এই ভয়, সরকার জাতিটাকে একটা ভয়ের আস্তরণের মধ্যে রেখে দিয়েছেন।  

সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, নাগরিক ঐক্যের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

এছাড়া সেমিনারে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল্লাহ আল নোমান, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, বরকত উল্লাহ বুলু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নুল আবদিন ফারুক, খায়রুল কবির খোকন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে সমমনা জোট দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরাম একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।