খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শারীরিক  অসুস্থতা নিয়ে গত ৯ই আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মাঝে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শারীরিক  অসুস্থতা নিয়ে গত ৯ই আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম, রক্ত পরীক্ষাসহ পুরো চেকআপ করা হয়েছে ৭৮ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে শুক্রবার রাতে বৈঠকে বসেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।

মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি লিভার জটিলতায় ভুগছেন। তার শরীরে সামান্য জ্বরও রয়েছে। রিপোর্টে লিভারের সমস্যাসহ ইউরিন ইনফেকশন রয়েছে বলেও জানান তিনি। বেগম খালেদা জিয়ার লিভারের কিছু চিকিৎসা দেশে করা সম্ভব হচ্ছে না। তাকে বিদেশে নেয়া প্রয়োজন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড পরামর্শ দিয়েছে। 

এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড শুক্রবার পর্যন্ত তিনবার বৈঠক করেছে। সেখানে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকসহ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন। মেডিকেল বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আরও ১/২ দিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে খালেদা জিয়াকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা ও লিভারের রোগে ভুগছেন। এদিকে গতকাল সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন।

অবিলম্বে দেশের বাইরে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে মেডিকেল বোর্ড। বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, ‘শুক্রবার আমি হাসপাতালে ছিলাম। তখন মেডিকেল বোর্ড বসেছিল। সেই বোর্ডের চিকিৎসকরা খুবই উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন যে, দেশনেত্রীকে যদি অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করা না হয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় বা বাংলাদেশে তার চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব হবে কিনা- তারা এখনো নিশ্চিত নন। তাই তারা বারবার বলছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে অ্যাডভান্স সেন্টারে পাঠানো উচিত। শুক্রবারও চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেছেন যে, বিদেশে পাঠানো খুবই দরকার।

এর আগে বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান বেগম খালেদা জিয়া। রাত নয়টা পর্যন্ত সেখানে তার কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে  মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন তিনি। ৭৮ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া এনিয়ে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। 

গত বছরের জুন মাসে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার নানা অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।