খাদ্য নিরাপদ অঞ্চল তৈরিতে একযোগে কাজ করার আহ্বান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে রাইট টু বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার এবং কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ‘খাদ্য নিরাপদ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল’ নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বুধবার (২৬ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে রাইট টু বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার এবং কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
শিরীন শারমিন বলেন, রাইট টু ফুড বাংলাদেশ আজকের খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অনেক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এধরনের সম্মেলন আয়োজন খুবই ফলপ্রসূ। এ সম্মেলন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্যচক্রের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলন থেকে অনেক পরামর্শ আসবে, যা ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে।
স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে খাদ্যাভাব দূরীকরণ ও কৃষি পুনর্গঠনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি বিশেষভাবে কৃষি গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন যার সুফল আমরা আজও পেয়ে যাচ্ছি। তিনি কৃষি ভূমিতে কর মওকুফের ব্যবস্থা করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ খুবই কর্মঠ। তাই আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে সংকটপূর্ণ সময়ে পৃথিবীতে অনেক দেশেই খাদ্যাভাব লক্ষ্য করা যায়। সমতাভিত্তিক ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে সবাইকে এগোতে হবে। সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করাই লক্ষ্য। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ফুড সিস্টেম সামিটে যোগ দিতে ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থান করছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কৃষি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কৃষকের জন্য দশ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার ব্যবস্থা, কৃষি ও সারে ভর্তুকি দেওয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ আজ চাল উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টেকসই কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সরকার ডেল্টা প্লান ২১০০ প্রণয়ন করেছে।
রাইট টু ফুড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আক্তারুজ্জামান, নেপালের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সঞ্জীব কুমার কার্না, কেয়ারের কান্ট্রি ডিরেক্টর রামেশ সিং এবং রাইট টু ফুড বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী গেস্ট অফ অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।