কয়েকদিনের মধ্যেই ইউক্রেনে হামলা করতে পারে রাশিয়া : বাইডেন
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনা করছে এবং এই হামলাকে বৈধ হিসেবে তুলে ধরতে মস্কো সাজানো আক্রমণের ঘটনা ঘটাতে পারে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই মন্তব্য করেন। ইউক্রেনের বাহিনী ও রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘর্ষের পর জো বাইডেনের এই মন্তব্য সামনে এলো বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এছাড়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে রাশিয়া অজুহাত খুঁজছে বলেও দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, সামনের কয়েকদিনের মধ্যেই এই হামলা চালানো হতে পারে। অবশ্য এই পরিস্থিতিতেও রুশ-ইউক্রেন সংকটের কূটনৈতিক সমাধান এখনও সম্ভব বলেও জানান ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘ইউক্রেনে হামলার অজুহাতের অংশ হিসেবে তারা ভুয়া হামলার ঘটনা ঘটোতে পারে, এটি বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট কারণ আমাদের কাছে আছে। প্রতিটি ইঙ্গিতই বলছে, রাশিয়া ইউক্রেনে ঢুকবে এবং হামলা চালাবে।’
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকে একই দাবি করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে ইউক্রেনে রুশ হামলা কিভাবে হতে পারে সেটি তিনি বিস্তারিত তুলে ধরেন।
নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকে ব্লিংকেন বলেন, ‘ইউক্রেনজুড়ে মিসাইল ও বোমা হামলা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা জ্যাম করে দেওয়া হবে। এছাড়া সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, এরপরই রুশ ট্যাংক ও সেনারা ইতোমধ্যেই চিহ্নিত করে রাখা প্রধান লক্ষ্যগুলোর দিকে এগিয়ে যাবে এবং বিস্তারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবে। অবশ্য নিজের এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ সামনে আনেনি যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন রেখেছে প্রতিবেশী রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলছে যে, যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা করে বসতে পারে রাশিয়া। একই আশঙ্কা প্রকাশ করছে ওয়াশিংটনের অন্যান্য মিত্র দেশগুলোও। এই পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার রাশিয়া জানায়, সামরিক মহড়া শেষে ইউক্রেনে সীমান্ত থেকে ঘাঁটিতে ফিরতে শুরু করেছে রুশ সেনারা। কিন্তু পশ্চিমা দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, মস্কোর এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
এদিকে বৃহস্পতিবার মার্কিন দূতাবাসের দ্বিতীয় প্রধান কর্মকর্তা বার্ট গোরম্যানকে বহিষ্কার করেছে রাশিয়া। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের দূতাবাসের উপপ্রধান কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে মস্কো। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে এটি প্রভাব ফেলবে এবং মস্কোর এই পদক্ষেপের জবাব কীভাবে দেওয়া হবে, তা আমরা বিবেচনা করছি।’
অবশ্য ঠিক কী কারণে মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে সম্পর্কিত কোনো ব্যাখ্যা এখনও দেয়নি মস্কো। এছাড়া বৃহস্পতিবার বেশ কড়া ভাষায় একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে রাশিয়া। সেখানে রাশিয়ার নিরাপত্তা দাবিগুলো এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: