ঈদ সামনে রেখে বাড়ছে জাল নোটের আতঙ্ক

নানা উৎসবের সময় এসব চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। ঈদকে সামনে রেখে জাল নোট তৈরির চক্রগুলো সব থেকে বেশি সক্রিয় থাকে।

ঈদ সামনে রেখে বাড়ছে জাল নোটের আতঙ্ক
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বছর জুড়েই সারাদেশে সক্রিয় থাকে জাল নোট তৈরির বেশ কয়েকটি চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা কখনো গা ঢাকা দেয়, কখনো আবার সক্রিয় হয়। দেশে প্রচলিত প্রায় সব মূদ্রার জাল নোট বানিয়ে নানা কৌশলে বাজারে ছাড়ে। সব ধরনের নোট জাল করলেও অধিক লাভের কারণে ১ হাজার ও ৫০০ টাকার নোটের দিকে তাদের ঝোঁক থাকে বেশি।

নানা উৎসবের সময় এসব চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। ঈদকে সামনে রেখে জাল নোট তৈরির চক্রগুলো সব থেকে বেশি সক্রিয় থাকে। এ সময় তারা নানা কৌশল অবলম্বন করে বাজারে মোটা পরিমাণে জাল নোট ছড়ানোর চেষ্টা করে। বিশেষ করে ঈদুল আজহায় সারাদেশে জাল নোট ছড়িয়ে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে রাজধানীসহ সারাদেশের পশু হাটে এসব চক্রের দ্রৌরাত্ব বাড়ে। কোরবানির পশু কেনাবেচার মাধ্যমে ছড়ান জাল নোট। এতে প্রতারণার শিকার হন ছোট ছোট ব্যবসায়ী, খামারি ও কৃষক। বরাবরের মতই এবারও এ আতঙ্কে রয়েছে তারা।

রাজবাড়ী এলাকায় গরুর ব্যবসা করেন মজিবর খান বলেন, রাজবাড়ির মধ্যে যেসব বাজার আছে সেসব বাজার কেন্দ্রিক আমার ব্যবসা। প্রতি হাটে দুই-চারটা কিনি, আবার বিক্রিও করি। কোরবানির ঈদের সময় কৃষকের কাছ থেকে বাকিতে গরু নিয়ে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করে এসে টাকা দেই। কোনো কোনো বছর ভালোই লাভ হয়, কোনো কোনো বছর আবার লোকসান হয়। এবারও যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু ঢাকায় যাওয়া নিয়ে নানা ভয় থাকে। এর মধ্যে জাল নোটের ভয় বেশি। প্রতি বছরই তো অনেক মানুষ জাল নোটের প্রতারণার শিকার হয়। টাকা জাল তা বোঝার পর অনেককে হাটের মধ্যে কান্নাকাটি করা দেখেছি। অনেকে বাড়িতে এসে বুঝতে পারে সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। সারা বছরের আশা-আকাঙ্ক্ষা নিমিষে ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়।

মোহাম্মদপুর সাদেক খান কৃষি মার্কেটে কাঁচা মালের আড়ত দেন। তিনি  বলেন, সারা বছরই মাঝেমধ্যে দুই-চারটা জাল নোট পাই। আমরা সব সময় সতর্ক থাকি। টাকা নেয়ার সময় দেখে নেই তারপরও হিসাব মেলাতে গিয়ে দুই একটা জাল নোট বের হয়। ঈদের সামনে একটু বেশি আতঙ্কে থাকি। এসময় বেচাকেনা বেশি থাকে, আড়তে ভীড় বেশি থাকে। যার জন্য সব সময় ভালো করে দেখেশুনে টাকা নেয়া হয়ে উঠে না। এ সুযোগে সদ্ব্যবহার করে প্রতারকরা।

আখের ব্যবসায়ী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, জাল নোটের সাথে সরকারের নানা পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত। নেতারাও জড়িত। নানা মানুষের ভাগ দিয়ে তারা জাল নোট বানায়। এদেশে সিস্টেম ছাড়া তো কিছু চলে না। মাঝেমধ্যে দুই চারজন যা আটক হয় তা কয়েকদিন পরই বের হয়ে যায়। তাদের কিছুই হয় না। ঈদকে কেন্দ্র করে টাকার জাল নোট নিয়ে এবারও কয়েকটি চক্র সংক্রিয় আছে বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। এসব চক্রকে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে। গতমাসে সারাদেশের বিভিন্না জায়গা থেকে জাল নোটসহ বেশ কয়েকজকে আটকও করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জাল নোট চক্রের সদস্যদের আটকের পর তারা জামিনে বের হয়ে যায। বের হয়ে আবারো এই ব্যবসায় জড়ায়। সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য অনলাইন প্লাটফর্মও ব্যবহার করে থাকবে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom