আইনের শাসন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে : রাষ্ট্রদূত হাস
প্রথম নিউজ, অনলাইন : রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত এইচ ই পিটার হাস। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে চর সানাউল্লায় নির্মানাধীন সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার কোম্পানি লি:-২ এবং উৎপাদনে থাকা সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার কোম্পানি লি: পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। করোনার সময় ভ্যাকসিন দিয়ে আমেরিকা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বিশ্বের জ্বালানি সঙ্কটের সময়ও আমেরিকা বাংলাদেশের পাশে থাকবে কিনা- সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পাশে থাকবো। শুধু গ্যাস, কয়লা বা ডিজেলভিত্তিক গতানুগতিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে নয়, রিনিউয়েবল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে আমাদের কোম্পানি বাংলাদেশের কোম্পানির সাথে ভবিষ্যতে কাজ করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানার তেল-গ্যাস উত্তোলনে আমেরিকা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিষয়টিতে আমি বিশেষজ্ঞ না। তবে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় থাকা তেল, গ্যাস উত্তোলনের সাম্ভাব্যতা আমেরিকান কোম্পানিগুলো যাচাই করে দেখবে। তিনি আরো বলেন, আমেরিকা উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাওয়ার সেক্টরের উন্নতিতে কাজ করছে। আমেরিকান কোম্পানি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও উন্নতিতে সহায়তা করছে। নারায়ণগঞ্জের এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সিলেটে সামিট বিবিয়ানা পাওয়ার কোম্পানি দেখতে যান। এ সময় তার সাথে ছিলেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান, ভাইস চেয়ারম্যান লতিফ খান, জিই গ্যাস পাওয়ারের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সিইও দীপেশ নন্দা, জিই গ্যাস পাওয়ারের কান্ট্রি লিডার নওশাদ আলী প্রমুখ।
সামিটের নির্মাণাধীন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান সামিটের চেয়ারম্যান আজিজ খান। আগামী বছরের জুনে সামিটের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার স্টেশন-২ থেকে জাতীয় গ্রিডে ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। তিনি বলেন, গত ১০-১২ বছরে জিডিপি যে শতকরা ৭-৮ ভাগ উন্নতি হয়েছে সেটা বিদ্যুতের কারণে হয়েছে। জিডিপির গ্রোথকে ধরে রাখতে চাইলে বিদ্যুতের প্রয়োজন। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস থেকে ৬২ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে ফলে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে। তিনি আরো জানান, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্যাসে চলতে পারে। ডিজেলে চলতে পারে। হাইড্রোজেনে চলতে পারে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কার্বন নিঃসরণ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬০ ভাগ কম ও অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৪০ ভাগ কম।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহ সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম আগের চেয়ে কমেছে। যেটা ৬০ ডলার পার এমএমভিকিউ হয়ে গিয়েছিল সেটা এখন ২৫ ডলার পার এমএমভিকিউ হয়েছে। আর কিছুটা কমলে বাংলাদেশের অসুবিধা হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রে পেট্রোবাংলার গ্যাস সরবরাহ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি এক শ’ ভাগ নিশ্চিত পেট্রোবাংলা গ্যাস আমাদের দিবে। কারণ এখানে গ্যাস দিলে সর্বনিম্ন মূল্যে বিদ্যুৎ পাবে। তিনি বলেন, রাশিয়া বিশ্বের ২০ ভাগ জ্বালানি সরবরাহ করত। সে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ইউরোপ বাকি বিশ্বের জ্বালানি নিয়ে নিচ্ছে। তবে তাদের সামারে অর্থ্যাৎ জুন-জুলাই মাসে যখন এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে তখন তাদের জ্বালানি সবচেয়ে কম লাগবে। ফলে এ প্ল্যান্ট চালুর সময় বিশ্ব বাজারে জ্বালানির মূল্য কমে আসবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews