৪৫তম বিসিএস প্রিলি: ১২০ পরীক্ষার্থীর ভাগ্য অনিশ্চিত
পিএসসির সরবরাহকৃত হাজিরা শিটে তাদের স্বাক্ষর গ্রহণ করতে পারেনি পরীক্ষাকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
প্রথম নিউজ, অনলাইন : শুক্রবার অনুষ্ঠিত ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও রংপুরের তিনটি পরীক্ষাকেন্দ্রের ১২০ পরীক্ষার্থী তাদের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। পিএসসির সরবরাহকৃত হাজিরা শিটে তাদের স্বাক্ষর গ্রহণ করতে পারেনি পরীক্ষাকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি প্রথমে গোপনীয়তার চেষ্টাও করা হয়। পরীক্ষাকেন্দ্রে আসন বিন্যাসের ক্ষেত্রে জটিলতার কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এই তিন কেন্দ্রে কোনো ‘হেল্প ডেস্ক’ ছিল না।
ওই তিন কেন্দ্র হলো রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও রংপুর সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তিন পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক ও পিএসসির পক্ষে পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ হন। তারা পিএসসির সরবরাহকৃত হাজিরা শিটে স্বাক্ষরের দাবি জানান।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান ও জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্রে আসেন। তিনি ঢাকায় যোগাযোগ করেন। এরপর তিনি পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নেওয়া সাদা কাগজটি ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভিনকে পিএসসির সরবরাহকৃত হাজিরা শিটের সঙ্গে সংযুক্ত করে পিএসসিতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই কেন্দ্রের ৪৫ পরীক্ষার্থীসহ বাকি দুই কেন্দ্রে আরও ৭৫ পরীক্ষার্থী এমন বিড়ম্বনার শিকার হন। তাদের ক্ষেত্রেও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পাঠানো হয়।
ভুক্তোভোগী পরীক্ষার্থী শারমিন আকতার স্বর্ণা জানান, তিনি এসে কেন্দ্রের নির্দেশনা বোর্ডের সঙ্গে তার কাছে থাকা পিএসসির আসন বিন্যাসের মিল খুঁজে না পাওয়ায় এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। তার সঙ্গে এমন ৪৫ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা আলাদা শ্রেণিকক্ষে বিশেষ ব্যবস্থায় নেওয়া হয়। কিন্তু পিএসসির হাজিরা শিটে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। রংপুরের মাহিগঞ্জের বাসিন্দা ডা. আবু বক্কর, ডা. আমনা ইসলাম পাপিয়াসহ একাধিক পরীক্ষার্থী একই অভিজ্ঞতার কথা জানান।
সরজমিন গিয়ে এবং পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারে কেন্দ্রগুলোতে পিএসসি নতুন পদ্ধতিতে দেশের প্রতিটি কেন্দ্রের আসন বিন্যাস করে। কিন্তু রংপুরের এই তিনটি কেন্দ্রের আসন বিন্যাস ও আসন বিন্যাসের যে নির্দেশনা বোর্ড সেখানে গড়মিল ছিল। ফলে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রগুলোতে এসে সমস্যায় পড়েন।
এই তিনটি কেন্দ্রে বিষয়টি সমাধান করতে বিলম্ব হলে পরীক্ষার্থীরা উদগ্রীব হয়ে পড়েন। পরে বিকল্পভাবে অন্য শ্রেণিকক্ষে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। সে কারণে পিএসসির হাজিরা শিটে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। তাই তাদের পরীক্ষা নেওয়া হলেও পিএসসির কাছে তাদের নাম অনুপস্থিতির তালিকায় থেকে যায়।
কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভিন বলেন, তিনি পিএসসির হাজিরা শিটে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর না থাকলেও তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে পিএসসিকে জানাবেন। পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী জানান, তার কেন্দ্রে ১৬ পরীক্ষার্থী এই সমস্যায় পড়েন।
বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে পিএসসিতে কথা বলেছেন। পরীক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলেছেন।