২৬ জেলায় বিদ্যালয় বন্ধ

সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় কঠিন হয়ে পড়েছে জনজীবন।

২৬ জেলায় বিদ্যালয় বন্ধ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় কঠিন হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশ কিছু জেলায় কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে রেকর্ড হচ্ছে। ফলে তীব্র শীতে দেশের বিভিন্ন জেলার বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসের সময়সূচিতেও পরিবর্তন এনেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এক নির্দেশনায় জানায়, শৈত্যপ্রবাহ হলে স্কুল-কলেজের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে। কোনো জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রির নিচে নামে, সেক্ষেত্রে সেই জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে।

এই নির্দেশনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড অনুযায়ী প্রায় ২৬টি জেলায় বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুর বিভাগে সবগুলো জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় এই বিভাগের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় আজ থেকে বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয়। 

এই বিভাগের আট জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪ হাজার ৩৬৫টি। এছাড়া বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩ হাজার ৯৪৬টি, মাদরাসা ১ হাজার ৫৩৮টি এবং এবতেদায়ী মাদরাসা ১ হাজার ৫৪৮টি রয়েছে। 

রংপুর জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৭ দশমিক ৫, নীলফামারীর ডিমলায় ৮ দশমিক ৫, সৈয়দপুরে ৮ দশমিক ৬, লালমনিরহাটে ৮ দশমিক ১, ঠাকুরগাঁওয়ে ৮, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ১ এবং গাইবান্ধায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগের সবগুলো জেলাতেও বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে রাজশাহী ব্যতীত সবগুলোতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। শুধু রাজশাহীতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা আছে।  রাজশাহীতে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছে। এদিকে সকাল ৯টায় বগুড়ায় তাপমাত্রা ৯, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭ দশমিক ৮, নওগাঁয় ৯, নাটোরে ৯, পাবনায় ৮, জয়পুরহাটে ৯ ও সিরাজগঞ্জে ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। 

খুলনা বিভাগের ৬টি জেলায় মঙ্গলবার সকালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। খুলনা জেলায় সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। এছাড়া যশোরে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুষ্টিয়া ৯ ডিগ্রি ও সাতক্ষীরায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তামমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে হওয়ায় এই জেলাগুলোতে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উপপরিচালক মোসলেম উদ্দিন এবং খুলনা বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অফিসের উপপরিচালক রুহুল আমীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ  বলেন, মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা অফিসের আওতায় রয়েছে। এছাড়া তাপমাত্রা আগামীকাল থেকে কিছুটা বাড়তে পারে। ঢাকা বিভাগে টাঙ্গাইলে ৮ দশমিক ৫, ফরিদপুরে ৭ দশমিক ৫, মাদারীপুরে ৮ দশমিক ৩, গোপালগঞ্জে ৭ দশমিক ৮ ও কিশোরগঞ্জে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। 

এদিকে সিলেট বিভাগের কোনো জেলাতেই বিদ্যালয় হয়নি। মঙ্গলবার সিলেট জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ১৩.৬ ডিগ্রিতে। সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা থাকে শ্রীমঙ্গলে। দেখা যায় এই এলাকায় রাতে অথবা ভোররাতে তাপমাত্রা ১০ মাত্রা বা তার ডিগ্রির নিচে নামে। কিন্তু সকাল হওয়ার আগে তাপমাত্রা ১১ কিংবা ১২ ডিগ্রির ওপরে থাকে তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই।

এছাড়া ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগেও এখন পর্যন্ত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর কাছাকাছি না নামায় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়নি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নামলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আর ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নামলে তা হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। আর ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলো তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।