Ad0111

হবিগঞ্জ রণক্ষেত্র: পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও বুলেটে শতাধিক নেতাকর্মী আহত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র নেই এটি এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

হবিগঞ্জ রণক্ষেত্র: পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও বুলেটে শতাধিক নেতাকর্মী আহত

প্রথম নিউজ,হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে শহরের শায়েস্তানগর থেকে সার্কিট হাউজ রোড পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আজ বুধবার বেলা পৌণে দুইটা থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। টানা এক ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। পুলিশ অন্তত শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে। সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে শতাধিক জন আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত (বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত) ৭ জনকে আটক করেছে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় দলীয় কার্যলয়ের সামনে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়। সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জয়নাল আবেদীন ফারুক, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডঃ এনামুল হক, খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন,সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছ, কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক শিশির সহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হন। বেলা দুইটার কিছু পূর্বে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে রওয়া হয়। এ সময় শায়েস্তানগর পয়েন্টে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাধা দিলে তাদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। বিকেল পৌনে তিনটা পর্যন্ত টানা সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে আহতদের হবিগঞ্জ ও সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় জেলা ছাত্রদল সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহমেদ রিংগনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতা তুষার আহম্মেদ ও সাইদুর রহমানকে মুমুর্ষ অবস্থায় সিলেট মেডিকেলে প্রেরন করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রেস ব্রিফিং এ জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ স্থলে আসার সময় বিভিন্ন স্থানে পুলিশ তাদের বাঁধা দিয়েছে। শহরের শায়েস্তানগরে বাঁধা দিলে নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে তাদের নিয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ অতর্কিতে নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও বুলেট ছুড়ে, সংঘর্ষে বিএনপি ও অংগ সংগঠনের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। 
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিমুল আক্তার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে কোন বাঁধা দেয়া হয়নি। পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল। হঠাৎ বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে ২৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, কি পরিমান রাবার বুলেট বা টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।


ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সংবাদ সম্মেলন:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র নেই এটি এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এতদিন আমরা বলেছি দেশে গণতন্ত্র নেই। সরকার ১২ বছর ধরে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আমেরিকায় যে গণতন্ত্র সম্মেলন হয়েছে সেখানে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তারা বলেছে বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক না। বাংলাদেশে যে মানবিক অধিকার নেই তা সবাই দেখছেন। কি পরিমান মানুষ গুম হয়েছে। বিনা বিচারে হত্যা হয়েছে। নিখোঁজ হয়েছে। আমাদের সকলের বিরুদ্ধে মামলা। এইযে মানবাধিকার লঙ্ঘন আমরা এতদিন বলছি। এখন তাও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কেন না আমাদের একটি সংস্থাকে আন্তর্জাতিকভাবে আমেরিকা থেকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাদের কিছু বড় বড় সামরিক এবং পুলিশের কিছু কর্মকর্তাকে তারা এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটি জাতি হিসেবে, দেশ হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এটি কাম্য নয়। কিন্তু সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এ সংস্থাগুলোকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলছে। আমরা দাবি করছি দেশনেত্রীকে অনতিবিলম্বে মুক্ত করা হোক এবং বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হোক। বিকেল সাড়ে ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মানুষের ভোটে অধিকার নাই। দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে সরকার পরিচালনা করছে। আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই সেটি হবিগঞ্জের ঘটনায় প্রতিফলিত হয়েছে। কেন না আমাদের মৌলিক অধিকার আছে আমাদের নেত্রী সম্পর্কে দাবি করা। আজকে একটি শর্তের জন আমাদের নেত্রী বিদেশে যেতে পারছেন না। তারা নির্বাহী আদেশে নেত্রীকে সাজা মওকুফ করেছে। কিন্তু সেখানে একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। আমাদের একটাই দাবি সে শর্ত তুলে নেয়া হোক। যে ধারায় আমাদের নেত্রীকে সাজা মওকুফ করেছেন সেখানে লেখা আছে শর্তযুক্ত অথবা শর্তহীনভাবে তারা এ কাজটি করতে পারবে। কিন্তু তারা শর্ত যুক্ত করেছে। আমরা শুধু শর্ত তুলে নেয়ার দাবি করছি। এখানে আইনের কোন সমস্য নেই। সমস্যা হচ্ছে সরকারের। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আজ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছেনা। আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, ড. এনাম আহমেদ, খন্দকার মোক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ, শাম্মি আক্তার শিপা, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পদাক ইকবাল আহমেদ শ্যামল।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news