সিরিয়ার মার্কিন ঘাঁটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন যুদ্ধবিমান ওড়াচ্ছে রাশিয়া
মার্কিন টেলিভিশন এনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিযোগ তুলে বলেন, রাশিয়া এখন সিরিয়ায় সংঘাতের উসকানি সৃষ্টি করছে। বিষয়টি নিয়ে চার বছর আগেই মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছিল।

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: সিরিয়ায় অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন যুদ্ধবিমান ওড়ায় রাশিয়া। এমন অভিযোগ করেছেন মার্কিন সামরিক কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল অ্যালেক্সাস গ্রিনকেউইচ। মার্কিন টেলিভিশন এনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিযোগ তুলে বলেন, রাশিয়া এখন সিরিয়ায় সংঘাতের উসকানি সৃষ্টি করছে। বিষয়টি নিয়ে চার বছর আগেই মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু এই মার্চ মাসে প্রায় প্রতিদিনই সেই সমঝোতা ভঙ্গ করেছে রুশ বিমান বাহিনী। এনবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো সীমান্তবর্তী আল-তানফ সামরিক ঘাঁটির উপর দিয়ে চলতি মাসে ২৫ বারের বেশি উড়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি কিংবা জানুয়ারি মাসে রাশিয়ার বিমান এভাবে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির উপর দিয়ে ওড়াউড়ি করেনি। মার্কিন সেনা কমান্ডার অ্যালেক্সাস বলেন, রাশিয়ার এই তৎপরতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। রাশিয়ার সেনারা প্রতিদিন আমাদের সামরিক ইউনিটের মাথার উপর দিয়ে সরাসরি বিমান পরিচালনা করছে। এই পরিস্থিতি অস্বস্তিকর।
মার্কিন সেনা কমান্ডার জানান, রাশিয়ার যেসব বিমান আমেরিকার ঘাঁটির উপর দিয়ে উড়ে যায় তার মধ্যে অত্যাধুনিক সু-৩৪ যুদ্ধবিমান রয়েছে। কিছু কিছু বিমান আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে, আবার কিছু কিছু বিমান আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সাথে রাখে। জেনারেল গ্রিনকেউইচ বলেন, তিনি মনে করেন না যে, সিরিয়ায় রাশিয়ার যুদ্ধবিমান মার্কিন সেনাদের উপর হামলা চালাবে। তবে ভুল হিসাব-নিকাশের কারণে সংঘাত সৃষ্টির ঝুঁকি দিন দিন বেড়ে চলেছে। কৃষ্ণ সাগরে কদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত মূল্যবান এমকিউ-৯ ড্রোন ডুবিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। এরপর দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়ার এ ধরনের আগ্রাসীভাবে বিমান পরিচালনার বিরুদ্ধে মার্কিন সেনা কমান্ড টেলিফোনের মাধ্যমে রুশ বাহিনীর কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর আচরণে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। রুশ সামরিক বাহিনী বলছে, সিরিয়ার যেসব জায়গায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা ঘাঁটি গেঁড়ে রয়েছে সেসব জায়গায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করে না রাশিয়া।
যদিও দুর্ঘটনাজনিত এবং সম্ভাব্য উত্তেজনা এড়াতে ২০১৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া একটি চুক্তি করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী, সিরিয়ার আকাশে যুদ্ধবিমান পরিচালনায় দুই দেশ একটি নিয়ম প্রতিষ্ঠা করে। উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছিল যে, ভূমিতে একে অপরের অবস্থানের ওপর সরাসরি যুদ্ধবিমান ওড়াবে না কেউ। কিন্তু গ্রিনকেউইচ বলেন, রাশিয়ানরা গত কয়েক মাস ধরে প্রোটোকলের সেই নীতিটি ত্যাগ করেছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি রাশিয়ানদের এমন আচরণকে যথেষ্ট উস্কানিমূলক বলে বর্ণনা করেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: