সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে টি এইচ খানের জানাজা
জানাজায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অংশ নেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, প্রবীণ আইনজীবী ও সাবেক মন্ত্রী টি এইচ খানের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে প্রিয় কর্মস্থল থেকে চির বিদায় জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অংশ নেন।
জানাজা শেষে প্রবীণ এই আইনজীবীর কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধায় চিরবিদায় জানান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যাতলয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিসহ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা। টি এইচ খানের ছেলে আফজাল এইচ খান সাংবাদিকদের বলেছেন, ঢাকার মোহাম্মদপুরে আরেকটি জানাজা হবে টি এইচ খানের। এরপর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সদরে জানাজা শেষে ঔটি গ্রামের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। প্রবীণ এই আইনজীবীর মৃত্যুতে আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
গত রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কল্যাণপুরে স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান টি এইচ খান। তার বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। টিএইচ খান তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী বেগম রওশন আরা জোবায়দা খানম ২০১১ সালে মারা যান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য টিএইচ খান জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
টিএইচ খানের পুরো নাম মো. তোফাজ্জল হোসেন খান, জন্ম ১৯২০ সালের ২১ অক্টোবর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে ১৯৪৭ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। ঢাকা হাই কোর্টের যাত্রা শুরু হলে তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে হাই কোর্টে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে টিএইচ খান পূর্ব পাকিস্তান হাই কোর্টের বিচারক হিসে্বে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে অবসর নিয়ে ফের আইনপেশায় যোগ দেন। ১৯৭৪ ও ১৯৭৯ সালে দুই দফা তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি। জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করলে তাতে যোগ দেন সাবেক এই বিচারক।
১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জিয়ার মন্ত্রিসভায় আইন, শিক্ষা, ধর্মসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এইচএম এরশাদের সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় এই আইনজীবীকে কারাগারেও যেতে হয়। টিএইচ খান এশিয়া অঞ্চল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রুয়ান্ডা ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি হয়েছিলেন। জেনেভায় হিউম্যান রাইটস কমিশনেরও সদস্য ছিলেন তিনি। আইন পেশা ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ কলেজ ও পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে শিক্ষকতাও করেছেন টি এইচ খান। তার সন্তানদের মধ্যে বড় ছেলে আফজাল এইচ খান সাবেক সাংসদ, বর্তমানে তিনি আইনপেশায় নিয়োজিত। ফয়সল এইচ খানও আইনজীবী এবং ফজলে এলাহী খান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। একমাত্র মেয়ে ফাতেমা মাহমুদা খান হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: