সোনাইমুড়ীতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামী গ্রেপ্তার

রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সোনাইমুড়ী থানায় সংবাদ সম্মেলনে করে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম।

সোনাইমুড়ীতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামী গ্রেপ্তার

প্রথম নিউজ, নোয়াখালী: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যৌতুক না দেওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় স্বামী মো. আবু ইউসুফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সোনাইমুড়ী থানায় সংবাদ সম্মেলনে করে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটখিল সার্কেল) নিত্যানন্দ দাস, সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী।  এর আগে গতকাল শনিবার সাতক্ষীরা শহরে আবাসিক একটি হোটেল থেকে ইউছুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতের দিকেত তাকে নিয়ে সোনাইমুড়ী থানায় পৌঁছায় পুলিশ।  গ্রেপ্তার ইউছুফ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর গ্রামের মাওলানা আবু মুছার ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আবু ইউছুফ একজন পেশাদার চোর। তিনি বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের মোবাইলফোন চুরি করতেন। ফেসবুকের মাধ্যমে নোয়াখালীর চাটখিলের তরুণী রহিমা আক্তার সুমির সঙ্গে পরিচয় হয় ইউছুফের। পরিচয়ের এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত এপ্রিল মাসে বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে সুমি পালিয়ে যান। দু’দিন পর বাড়িতে ফোন করে জানান, তিনি কুমিল্লায় আছেন, ভালো আছেন। এরপর গত চার-পাঁচ মাস আগে সুমি ইউছুফকে নিয়ে চাটখিলের গ্রামের বাড়িতে এলে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের পুনরায় বিয়ে দেওয়া হয়।

ইউছুফের বরাত দিয়ে সম্মেলনে বলা হয়, গত মাসে ইউছুফ সোনাইমুড়ী পৌরএলাকার পশ্চিমপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ১ অক্টোবর সকালে ইউছুফ বিদেশে যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। কিন্তু স্ত্রী টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী সুমিকে ইউছুফ নাকে মুখে থাপ্পড় মারলে তার নাক মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তখন তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা আরও বেড়ে যায়। সে সময় ইউছুফ তার স্ত্রী সুমির গলায় থাকা ওড়না পেঁচিয়ে ধরলে এক মিনিটের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

এসপি আরও জানান, গ্রেপ্তার ইউছুফ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, স্ত্রী সুমির মৃত্যুর পর তিনি ওই দিন মেঝেতে মরদেহ ফেলে বাসার দরজায় তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় চলে যান। পরদিন তিনি পুনরায় ওই বাসায় আসেন এবং স্ত্রীর মরদেহকে টেনে হিঁচড়ে বাথরুমে নিয়ে লুকিয়ে রাখেন এবং বাথরুমের দরজা বন্ধ করে বাসায় তালা দিয়ে সাতক্ষীরা পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার জানান, আসামি আবু ইউসুফ একজন পেশাদার চোর। বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিদের মোবাইলফোন চুরি করা তার পেশা ও নেশা। তার হেফাজত থেকে নয়টি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়েছে।