রূপপুর প্রকল্পের ৬৫ লাখ টাকার ক্যাবল চুরি
‘আছের’ এর ডাইরেক্টর অব সিকিউরিটি ভিএন তুরুটিন বাদী হয়ে প্রকল্পের পক্ষ থেকে পাবনার ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
প্রথম নিউজ, পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদী নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক (আরএনপিপি) বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের অভ্যন্তরে পদ্মার পাশে পানিপথে মালামাল ওঠানামার জন্যে দুটি লেইভার ক্রেন থেকে বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরি হয়ে গেছে। রূপপুর প্রকল্পে কাজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ১২৬ চাকা বিশিষ্ট ক্রেন থেকে চুরি যাওয়া ক্যাবলের মূল্য ৬৫ লাখ টাকা।
গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ‘আছের’ এর ডাইরেক্টর অব সিকিউরিটি ভিএন তুরুটিন বাদী হয়ে প্রকল্পের পক্ষ থেকে পাবনার ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, রূপপুর প্রকল্পের অভ্যন্তরে জাহাজের মালামাল ওঠানামার নির্ধারিত স্থানে থাকা ওই দুটি লেইভার ক্রেন ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণের সময়ে ক্যাবলগুলো রাখা ছিল। কিন্তু ৯ জানুয়ারি পুনরায় জাহাজে ওই দুটি লেইভার ক্রেনের যান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় ২৬৫ মিটার ক্যাবল খোয়া দেখতে পাওয়া যায়। এরপর থেকে রূপপুর প্রকল্পের জন্য নির্মিত জেটিতে মালামাল ওঠানামা অনিয়মিত রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্রেন দুটি থেকে ক্যাবলগুলো চুরি হয়েছে। কিন্তু এত বিপুল অঙ্কের টাকার মালামাল খোয়া গেলেও এ বিষয়ে প্রকল্পের অনেকেই মুখ খুলতে চান না।
রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবরকে একাধিকবার কল করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এদিকে স্থানীয় ব্যক্তিদের ধারণা, ক্রেন দুটি থেকে যান্ত্রিক বিষয় জানাশোনা লোকজনই ক্যাবলগুলো সরিয়ে নিতে পারেন। অনভিজ্ঞ কেউ হয়ত এভাবে ক্যাবল নিয়ে পারে না। বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার।
পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাইফুল ইসলাম বাবু মণ্ডল বলেন, রূপপুর প্রকল্পে অনেকগুলো সরকারি সংস্থা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। তাই চুরির বিষয়টি আরো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার।
তবে রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক (সাইট) আশরাফুল ইসলাম জানান, চুরির বিষয়টি মোটেও ঠিক হয়নি। এখানে প্রত্যেকটি সাব কন্ট্রাক্টরের নিজস্ব সিকিউরিটি আছে। মূল ঠিকাদার রোসাটমেরও কিছু দায়িত্ব আছে। গত সপ্তাহে রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবর প্রকল্পে এসে অনেকের সঙ্গে মিটিংও করেছেন। এ সময় সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার তাগিদ দেওয়া হয়। আমরাও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার পরে রূপপুর প্রকল্প থেকে মামলার জন্য এজাহার জমা দেওয়া হয়। রাতেই মামলাটি গ্রহণ করা হয়। চুরি বিষয়ে তিনি বলেন, ওই ক্রেনের ক্যাবল চুরির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের হয়তো নিয়মিত ওখানে যাতায়াত আছে বা মেশিন সম্পর্কে ধারণা আছে। তা না হলে এত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হলো কীভাবে?
তিনি জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য পাকশী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আতিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সকালে তিনি জানান, মামলা হওয়ার পরও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: