মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে খালেদা জিয়ার, ধরা পড়েছে ব্লক: মির্জা ফখরুল
তিনি জানান, চিকিৎসকরা তার এনজিওগ্রাম করেন। এতে তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। তখন চিকিৎসকরা সফলভাবে সেখানে রিং বসান। চিকিৎসকরা আশা করছেন, তিনি হৃদরোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জানান, চিকিৎসকরা তার এনজিওগ্রাম করেন। এতে তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। তখন চিকিৎসকরা সফলভাবে সেখানে রিং বসান। চিকিৎসকরা আশা করছেন, তিনি হৃদরোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো না হলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
আজ শনিবার বিকেল ৪টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক আপডেট তুলে ধরেন তিনি। এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার জন্য বাইরে (বিদেশে) চিকিৎসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। অন্যথায় এর দায় সরকারকে বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মাইল হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় তার শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা জানায়, রক্তনালীতে ৯৯ ভাগ ব্লক হয়েছে। এজন্য তাকে রিং পড়ানো হয়। হার্টের সমস্যা সাময়িকভাবে রিলিফ হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত করেনি বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
এর আগে শনিবার দুপুরে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অসুস্থ হওয়ার পর তাঁকে রাত ৩টা ২০ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেডিকেল বোর্ড অতি দ্রুত তাঁর হৃদযন্ত্রে এনজিওগ্রাম করার কথা জানিয়েছিল। একই সঙ্গে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদের ব্যবস্থা নিতে বলেছে মেডিকেল বোর্ড। এখন সরকারের কাছ থেকে অনুমতির পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেওয়া হবে। সেজন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনায় আজ শনিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বৈঠকে বসেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, এভারকেয়ার হাসপাতালের ডা. জাফর, ব্যক্তিগত চিকিৎসকদলের প্রধান ডা. এফ এম সিদ্দিকী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর, বিশেষ করে এনজিওগ্রাম করার পর বোঝা যাবে সমস্যা কতটা জটিল। এমনিতেই তো তিনি (খালেদা জিয়া) গুরুতর পেশেন্ট। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘চিকিৎসকেরা এরই মধ্যে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করেছেন, সেগুলো অনুযায়ী আগের দিন বিকেল থেকে তাঁর হার্টে কিছু সমস্যা দেখা গেছে। তিনি তো একটু চাপা স্বভাবের মানুষ, কিছু বলেননি কাউকে। শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং ডা. এফ এম সিদ্দিক তাঁকে চেকআপ করতে গেছেন, তখনই তাঁর প্রবলেমের বিষয়টি জানা যায়। তখনই তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দিবাগত রাত ২টার দিকে ডা. এ জেড এম জাহিদের কাছে খবর পাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থবোধ করছেন, তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিতে হবে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ম্যাডামের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আমি চলে আসি। আসার পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা হয়। তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের সঙ্গেও কথা হয়। এরপর হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, দোয়া করি আগের মতোই তিনি অসুস্থতা কাটিয়ে উঠবেন এবং সুস্থ হয়ে আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ চৌধুরী টুকু প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews