ভিনিসিয়ুসের বর্ণবাদের শিকার হওয়ার পেছনে যেটি ভূমিকা রাখছে!

চলতি মৌসুমে মোট পাঁচবার দর্শকের কাছ থেকে বর্ণবাদী মন্তব্য শুনেছেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেই টনক নড়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষের।

ভিনিসিয়ুসের বর্ণবাদের শিকার হওয়ার পেছনে যেটি ভূমিকা রাখছে!

প্রথম নিউজ, স্পোর্টস ডেস্ক: চলতি মৌসুমে মোট পাঁচবার দর্শকের কাছ থেকে বর্ণবাদী মন্তব্য শুনেছেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেই টনক নড়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষের। সর্বশেষ ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে বর্ণবাদের শিকার হওয়ার পর তিনজনকে গ্রেফতার এবং মাঠের একটি স্ট্যান্ডকে সাময়িক সময়ের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আর্থিক জরিমানা করা হয় ক্লাবটিকে। শুরুতে ভিনিসিয়ুসের দিকে তোপ দাগলেও পরে ক্ষমা চান লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস। এবার তিনি এই বর্ণবাদী আচরণের কারণও জানিয়েছেন।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তেবাস ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, কেন ভিনিসিয়ুস বারবার বর্ণবাদের শিকার হচ্ছেন। একইসঙ্গে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলীয় ফুটবলারের সঙ্গে দেখা করারও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। ভিনিসিয়ুসের বারবার বর্ণবাদের শিকার হওয়ার পেছনে অদ্ভুত যুক্তি দেখিয়েছেন তেবাস, ‘ভিনিসিয়ুস দুর্দান্ত এক খেলোয়াড়, এই কারণেই সে বারবার বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হচ্ছে। আমি ভিনিসিয়ুস অথবা তার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চাই। আমি তাকে দেখাতে চাই যে বর্ণবাদ দমনে আমরা কী কী করছি। আমরা ভিনির সামনে প্রমাণ করতে চাই, লা লিগা এমনই একটা প্রতিষ্ঠান, যারা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সব সময়ই লড়াই করে যাচ্ছে।’

লা লিগার ইতিহাস যেকোনো ধরনের বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করার। এটা সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তেবাস, ‘আমাদের এর আগে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস আছে। একসময় লা লিগার ম্যাচগুলোতে সমকামী বিদ্বেষ কিংবা বিদেশিদের প্রতি বিদ্বেষমূলক স্লোগান দিতে দেখা যেত। আমরা সেগুলো বন্ধ করেছি। এখন সেগুলো নেই। এখন বর্ণবাদী স্লোগান যারা দিচ্ছে, তাদের সংখ্যাও খুব কম। আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ব। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা প্রতিদিনের। মায়োর্কা, রিয়াল ভায়াদোলিদ, অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার পর ভ্যালেন্সিয়া; লা লিগার চলতি মৌসুমে এ নিয়ে পাঁচবার প্রতিপক্ষের মাঠে বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হলেন ভিনিসিয়ুস। প্রতিবারই এই রিয়াল ফরোয়ার্ড প্রতিবাদ জানালেও লিগ কর্তৃপক্ষের তাতে ছিল গা-সওয়া ভাব, যেন কিছুই হয়নি! কিন্তু ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষের ম্যাচের পর আর মানতে পারেননি ভিনিসিয়ুস।

ওই সময় তিনি টুইটারে লেখেন, ‘এটা প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার নয়। লা লিগায় বর্ণবাদ স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ কর্তৃপক্ষ ও স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন এটা মনে করে এবং সমর্থকদের দলগুলো সাহস জোগায়। বলতে বাধ্য হচ্ছি, স্পেন আজ ব্রাজিলিয়ানদের কাছে বর্ণবাদী দেশ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে।’ এরপর লা লিগা সভাপতি তেবাস বলেছিলেন, ‘লা লিগার দিকে আঙুল তোলার আগে নিজের দিকে তাকাও ভিনিসিয়াস। বর্ণবাদ নিয়ে লা লিগার করণীয় বিষয়ে তোমার কাছে আমাদের ব্যাখ্যা করা উচিত, সেহেতু আমরা সেই চেষ্টা করেছি। কিন্তু এর আগে দুই দফা আপনি দিনক্ষণ দিয়েও উপস্থিত হননি। সমালোচনা এবং লা লিগাকে অপমান করার আগে যথাযথভাবে নিজেকে জানাতে হবে। অন্যের দ্বারা পরিচালিত হবেন না।’ 

পরে সেই ঘটনার ক্ষমা চেয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তেবাস বলেন, ‘আমি ভিনিসিয়ুসের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। শুধু ভিনিসিয়ুসই নন, যারা মনে করেন আমার টুইটটি ভিনিকে আক্রমণ করে করা হয়েছিল, তাদের সবার কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’