ব্যাংকেও সেঞ্চুরি হাঁকাল ডলার

বেসরকারি সোশাল ইসলামী ব্যাংক বৃহস্পতিবার ১০২ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করেছে; কিনেছে ১০০ টাকায়। মেঘনা ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০১ টাকায়। ইস্টার্ন ব্যাংক ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে, সিটি ব্যাংক ৯৯ টাকায় বিক্রি করছে। প্রাইম ব্যাংক নিচ্ছে ৯৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক ৯৮ টাকায় বিক্রি করছে প্রতি ডলার।

ব্যাংকেও সেঞ্চুরি হাঁকাল ডলার
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে সেঞ্চুরির পর ব্যাংকগুলোতেও ডলারের দর ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। এখন ভ্রমণ, জরুরি প্রয়োজন কিংবা চিকিৎসার জন্য কেউ বিদেশে যেতে চাইলে ব্যাংক থেকে প্রতি ডলারের জন্য গুনতে হবে ১০০ টাকার বেশি।

বেসরকারি সোশাল ইসলামী ব্যাংক বৃহস্পতিবার ১০২ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি করেছে; কিনেছে ১০০ টাকায়। মেঘনা ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০১ টাকায়। ইস্টার্ন ব্যাংক ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে, সিটি ব্যাংক ৯৯ টাকায় বিক্রি করছে। প্রাইম ব্যাংক নিচ্ছে ৯৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক ৯৮ টাকায় বিক্রি করছে প্রতি ডলার।

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে ১ ডলার কিনতে খরচ হয়েছে ৯৪ টাকা; অগ্রণী ব্যাংক ডলার বিক্রি করেছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সায়। সোনালী ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে লাগছে ৯২ টাকা ৪৫ পয়সা। খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ১০২ টাকা ৬০ পয়সায় ডলার বিক্রি হয়েছে। অনেক ব্যাংক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম ১০১ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আনতে ১০০ টাকা দিয়েছে কয়েকটি ব্যাংক।

এদিকে এক দিনের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে আরও ৫০ পয়সা দর হারিয়েছে বাংলাদেশি টাকা। এক ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা; বুধবার ছিল ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে টাকা-ডলার বিনিময় হার ঠিক হয়ে থাকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী। বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। দাম নির্ধারিত হয়েছে ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা। আর এটাই আজকের আন্তব্যাংক দর। গত বছরের আগস্ট থেকে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে; দুর্বল হতে থাকে টাকা। তার আগে এক বছরেরও বেশি সময় ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরজুড়ে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন দেখা যায়। সে কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যায়। সে পরিস্থিতিতে ডলারের দর ধরে রাখতে ওই অর্থবছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার কেনা হয়।

আগস্ট মাস থেকে দেখা যায় উল্টো চিত্র। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে আমদানি ব্যয়। রপ্তানি বাড়লেও কমতে থাকে রেমিট্যান্স। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও কমতে থাকে। বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়; বাড়তে থাকে দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখতে আগস্ট থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, চলে পুরো অর্থবছর।

মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক রাখতে ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭৬২ কোটি (৭.৬২ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই রিজার্ভ থেকে এক অর্থবছরে এত ডলার বিক্রি করা হয়নি। আর এর বিপরীতে বাজার থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার মতো তুলে নেয়া হয়। অথচ তার আগের অর্থবছরে (২০২০-২১) বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়ায় দর ধরে রাখতে রেকর্ড প্রায় ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলার। এর পর থেকেই বাড়তে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রার দর। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, এক বছরে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছে ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom