বন্দরে ১১ হাজার গাড়ির তথ্য গোপন করে রাজস্বে নয়ছয়
মামলায় সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে ১২ লাখ ৬২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে প্রবেশ করা প্রায় ১১ হাজার গাড়ির তথ্য গোপন করে দুদকের মামলার আসামি হলেন সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আবদুল কাদের জিলানী। রোববার (১৪ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আবদুল কাদের জিলানীর বিরুদ্ধে ১২ লাখ ৬২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আখাউড়া স্থলবন্দরের রেজিস্টারে মোট ১১ হাজার ৯৯৫টি গাড়ি এন্ট্রি দেওয়া আছে। কিন্তু কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের হিসাব অনুসারে ওই সময়ে অর্থাৎ ২৬ মাসে মোট ২২ হাজার ৯১৪টি গাড়ি বন্দরে আসে। অর্থাৎ কাস্টমসের হিসাবের চেয়ে স্থলবন্দরের রেজিস্টারে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ হাজার ৯০৭টি গাড়ি কম এন্ট্রি দেওয়া আছে।
নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কাস্টমসে এন্ট্রি করা গাড়ির তুলনায় স্থল বন্দরে ১০ হাজার ৯০৭টি গাড়ি কম এন্ট্রি করে এন্ট্রি ফি ও ভ্যাট বাবদ সরকারি ১২ লাখ ৬২ হাজার ৯০৩ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ওই সময়ে বন্দরে প্রবেশ করা গাড়ি এন্ট্রির দায়িত্বে ছিলেন ট্রাফিক পরিদর্শক আব্দুল কাদের জিলানী।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধান শেষে ২০২১ সালের শেষ দিকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক আলতাফ হোসেন মামলার সুপারিশ করেন। তার পরের বছর আলতাফ হোসেন সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পাওয়ায় অনুসন্ধানের ভার যায় মাহবুবুল হকের কাছে। তিনি আবারও পর্যালোচনা করে মামলার সুপারিশ করলে দুদক তাতে অনুমোদন দেয়।
দুদক জানায়, সাবেক ট্রাফিক পরিদর্শক আবদুল কাদের জিলানী সরকারি অর্থ সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় শান্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়া ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে বন্দরের আয় ২৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬১৩ টাকা কর্তৃপক্ষের ব্যাংক হিসাবে জমা না হওয়ার অভিযোগ ছিল। তবে আত্মসাতের ঘটনা উদঘাটিত হওয়ার পর ৭ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তকালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।