প্রথম নিউজ, যশোর: যশোরের দুটি সীমান্তে তিন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে দুজনের মরদেহ সীমান্ত থেকে উদ্ধার করেছে বিজিবি। অপরজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনেরা বাড়িতে আনার পর তিনি মারা যান। একই ধরনের আঘাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
বিকেলে সর্বশেষ মরদেহ উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম সাকিবুর রহমান (২০)। তিনি চৌগাছা উপজেলার শাহজাদপুর গ্রামের জামিনুর রহমানের ছেলে। শৈশব থেকেই তিনি শার্শা উপজেলার দীঘিরপাড় গ্রামে নানাবাড়িতে বসবাস থাকতেন। এর আগে সকালে মরদেহ উদ্ধার হওয়া দুই যুবক হলেন- শার্শা উপজেলার কাগজপুকুর গ্রামের ইউনুস মোড়লের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩৩) এবং দীঘিরপাড় গ্রামের আরিফ মোড়লের ছেলে শাহাবর আলী (৩৫)।
স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘীরপাড় গ্রামের শাহাবুর হোসেন কাজের সন্ধানে ভারতে যাচ্ছিলেন। আর কাগজপুকুর এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন যাচ্ছিলেন স্ত্রীর সাথে দেখা করতে। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধরে নির্যাতনের পর মরদেহ ইছামতি নদীতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ তাদের।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, রাতে জাহাঙ্গীর, সাকিবুর, শাহবরসহ কয়েকজন একসঙ্গে ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন বিএসএফ সদস্যরা তাদের কুপিয়ে ও মারধর করে ইছামতী নদীতে ফেলে দেন। সেখান থেকে জাহাঙ্গীরকে তার স্বজনেরা উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতেই তার মৃত্যু ঘটে। পুলিশকে না জানিয়ে সকালে জাহাঙ্গীরের মরদেহ দাফনের চেষ্টা করেন পরিবারের স্বজনেরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
তিনজনের হত্যার কারণ জানতে চাইলে বিজিবি ও পুলিশের কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে চাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের দুজন কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা কুপিয়ে ও পিটুনি দিয়ে তিনজনের মৃত্যু ঘটিয়েছেন। বিজিবি কর্মকর্তারা বলেন, বিএসএফের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মো. রাসেল মিয়া জানান, ‘বেনাপোল থেকে একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
জানতে চাইলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির আব্বাস জানান, ‘শার্শা সীমান্ত থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিজিবির সদস্যরা মরদেহ দুটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটানোর চিহ্ন দেখা গেছে।’