পদত্যাগ ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই: গণতন্ত্র মঞ্চ
কালবিলম্ব না করে এবং আর কোন মায়ের বুক খালি না করে অনতিবিলম্বে পদত্যাগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: সরকারের সামনে পদত্যাগ করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে মঞ্চ বলছে, এই সরকারকে আর তারা ক্ষমতায় দেখতে চায় না। কালবিলম্ব না করে এবং আর কোন মায়ের বুক খালি না করে অনতিবিলম্বে পদত্যাগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। বলা হয়, এই সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গেছে। যদি শুভবুদ্ধি থাকে তাহলে তারা পদত্যাগ করবে। কারণ এখন একমাত্র রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে পদত্যাগ। শনিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মৃত্যুর একটা মিছিল শুরু হয়েছে। এটা একটা মৃত্যু উপত্যকা বানিয়ে ফেলেছে। উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) এখনো বুঝতে পারছেন না যে, তার যে পদত্যাগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গেছে। সেটা উনি ঠিক মতো বুঝতে পারছেন না। থামাতে পারবেন না। আমি মনে করি, আমরা মনে করি- এই সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজেছে। তাদের যেতে হবে। যদি শুভবুদ্ধি থাকে তাহলে পদত্যাগ করেন। যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন তত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারবেন। নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি। আর যত দেরি করবেন তত দেশের ক্ষতি হবে।
মান্না বলেন, কালবিলম্ব না করে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। একটা খেলা খেলার চেষ্টা করছেন। পদত্যাগ করবো তারপরে দিয়ে যাবো কার কাছে? ওই কাণ্ডটা এরশাদ সাহেবও করেছিলেন। তুমি যাও, তারপরে কে আসবে আমরা বুঝবো। আন্দোলনকারী শক্তি বুঝবে। আর রোববার থেকে ছাত্ররা যে কর্মসূচি তারা দিয়েছে তার প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করছি।
ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আর একদিন ক্ষমতায় থাকা মানে বাংলাদেশে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যয়, রাজনৈতিক দিক থেকে বিপর্যয়, আরও প্রাণহানি, নির্যাতন-নিপীড়ন এবং আরও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার মুখোমুখি হওয়া। আমরা সরকারকে আজকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, ছাত্রদের পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণ জানিয়ে দিয়েছে, এই সরকারকে আর তারা ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আর কালবিলম্ব না করে এবং আর কোন মায়ের বুক খালি না করে অনতিবিলম্ব পদত্যাগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ছাত্রদের এই অভ্যুত্থান এখন ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পরিণত হয়েছে। দেশের সমস্ত মানুষ এখন এই সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি জ্ঞাপন করছে। আর এই সরকার তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা রাখেনি। এখন একটাই পথ, এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। তাদেরকে যেতে হবে। আমরা আগে যেটা বলেছি, আবার নতুন করে বলবো, রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। রোববার থেকে শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে সংহতি ও সমর্থন জানানো হয়। পাশাপাশি ছাত্র জনতার ডাকে দেশবাসীকে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যও আহ্বান জানায় গণতন্ত্র মঞ্চ।
সংবাদ সম্মেলনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বক্তব্য রাখেন।