পৃথক মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৫৫ নেতার কারাদণ্ড

মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

পৃথক মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৫৫ নেতার কারাদণ্ড

প্রথম নিউজ, অনলাইন: রাজধানী ঢাকার দুই থানায় করা পৃথক মামলায় বিএনপির ৫৪ নেতাকর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে জামায়াতের একজনকে দিয়েছেন দুই বছর কারাদণ্ড। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রাজধানীর বংশাল থানায় দশ বছর আগে করা এক মামলায় বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে ৬ মাসের এবং দক্ষিণখান থানায় ২০১৮ সালে করা এক মামলায় বিএনপির ৩৮ জন নেতাকর্মীকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নাশকতার অভিযোগে কাফরুল থানার মামলায় জামায়াতের একজনের দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ দুই মামলাসহ গত তিনমাসে ৩৭ মামলায় বিএনপির ৭১১ জনের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এরমধ্যে নভেম্বর মাসে ৩০ মামলায় ৫৭৫ জনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দশ বছর আগে বংশাল থানায় নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় এক ধারায় বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক আলী সরকারসহ ১৬ জনের ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৩ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া।

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় পলাতক থাকা আসামিদের বিরুদ্ধে সাজাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ইসহাক আলী সরকার, মো. মোহন, রফিকুল ইসলাম, ডলার ইকবাল, মো. শাজাহান, আব্দুল করিম, সিরাজ শেখ ওরফে বাঙাল সিরাজ, মোহাম্মদ মাসুম, মো. বেলাল হোসেন, রাজু আহমেদ, আব্দুর রহমান ওরফে বোমা রহমান, মোহাম্মদ সেন্টু, মো. ফারুক, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, জুবায়ের আলম ও কামরুল ইসলাম। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে নাশকতার অভিযোগে বংশাল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করে।

এদিকে রাজধানীর দক্ষিণখান থানার মামলায় বিএনপির ৩৮ নেতাকর্মীকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ সাজা দেয়া হয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, আব্দুল আলীম, শাহিন মিয়া, মো মামুন, শামসুল হক রিপন, রুম্মন সিদ্দিকি, শাহীন, রাজীব, সমোয়ার হোসেন, মো. দুলাল মিয়া, নুরুজ্জামান হাওলাদার সোহেল, আনোয়ার হোসেন বকুল, মো. কামাল হোসেন, শাহ আলম, দীন ইসলাম, মো. আব্দুর রহিম বাদশা, রিপন সরকার, আবু বকর সিদ্দিক, ছোকন মেম্বার, আলী হোসেন, মোতালেব হোসেন রতন, শহিদুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব আলী, মো. মোকলেস, মমতাজ উদ্দিন, মো. শেখ নূর মোহাম্মদ, মো. হারুন অর রশিদ হারুন, মো. আনোয়ার হোসেন সরকার, মো. তোফাজ্জল হোসেন মিঠু, সরকার রফিকুল ইসলাম মুকুল, মো. গোলাম মোস্তাফা, মো. মোজাফফর হোসেন বাদল, মো. জাকির হোসেন, মো. ইয়াকুব আলী, মো. সফিল উদ্দিন, মো. শরীফ হোসেন, রিপন মিয়া, মো. লুৎফর রহমান খোকন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নাশকতার অভিযোগে দক্ষিণখান থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে।

ওদিকে দশ বছর আগে কাফরুল থানা এলাকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা একটি মামলায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিমের দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তার তিন হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২১ মার্চ কাফরুল থানার স্টাফ কোয়ার্টারের বিপরীতে একটি সিএনজি থামিয়ে লস্কর মোহাম্মদ তসলিমসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন অগ্নিসংযোগ করেন। এতে সিএনজির দশ হাজার টাকা ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় সিএনজিচালক মহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে কাফরুল থানায় মামলা করেন। ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিমকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলার বিচার চলাকালে ৯ জন সাক্ষীর মধ্যে পাঁচজন সাক্ষ্য দেন।