পঁচে গেল দেড় হাজার বিঘা জমির ধান
জলাবদ্ধতার কারণে ২০টি গ্রামের অন্তত দুই হাজার চাষির ফসলহানি হয়েছে।

প্রথম নিউজ,নওগাঁ: সম্প্রতি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নওগাঁর হাসাইগারী বিলে রোপণ করা প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমির ধান পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। খালে জলাবদ্ধতায় পানি বের হতে না পারায় রোপণ করা বোরো আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার চাষি।
বাজেভাবে খনন ও ভরাট হওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি বলে অভিযোগ তাদের। তবে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দাবি, বিলের পানি বের করার দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নেওয়া হলেও কৃষকদের বাধার কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিন সপ্তাহ আগে রোপণ করা ধান দ্রুতই বাড়ছিল। কিন্তু বিলের বিস্তৃত মাঠ সবুজ হওয়ার আগেই নেমে এলো দুর্ভোগ।
অসময়ের বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তলিয়ে যাওয়া পানি জমি থেকে বের হতে না পারায় গত দু’সপ্তাহ ধরে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নওগাঁর সদর উপজেলার হাসাইগারী, বিল হামরা, প্রতাপদহ বিলে এমন পরিস্থিতি। দেড় থেকে দুই ফুট নিচে তলিয়ে অন্তত দুই হাজার বিঘা জমির ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
চাষিরা জানান, বছরে একবার বোরো মৌসুমে ধান আবাদ করেন চাষিরা। শুস্ক মৌসুমে আপদকালীন দুর্যোগে পানি বের করার জন্য ৪ বছর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এলজিইডির অধীনে বিলের মাঝ দিয়ে খনন করে। তবে খননের অল্প কিছুদিন পরই তা ভরাট হয়ে যায়। অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় এমন পরিস্থিতি বলে অভিযোগ তাদের।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘায় তাদের ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অসময়ের বৃষ্টিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা নিকটবর্তী খালের সঙ্গে বিল সংযোগের দাবি জানান। তবে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের উল্টো দাবি, স্থানীয়দের বাঁধার কারণেই বন্ধ হয়ে যায় বিলের খাল খননকাজ।
এ ব্যাপারে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নওগাঁ রিজিয়ন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সমসের আলী বলেন, '২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিএমডিএ জলবায়ু ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার প্রদাপদহ থেকে হাঁসাইগাড়ী পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার খাল পুনর্খনন শুরু করা হয়। খালের অবস্থা এখনও ভালো। তবে পানি প্রবাহের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'কীভাবে জলাবদ্ধতা দূর করা যায়, সে বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা করা শুরু করে দিয়েছি। জলাবদ্ধতার কারণে ২০টি গ্রামের অন্তত দুই হাজার চাষির ফসলহানি হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: