নোয়াখালীতে প্রবাসীকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে নির্যাতন
প্রবাসীকে চোখ বেঁধে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও টাকা দাবির অভিযোগে নোয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় তাঁদের বিরুদ্ধে ওই পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রথম নিউজ, নোয়াখালী: প্রবাসীকে চোখ বেঁধে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও টাকা দাবির অভিযোগে নোয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় তাঁদের বিরুদ্ধে ওই পদক্ষেপ নিয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই প্রবাসীর নাম মহিন উদ্দিন। তিনি বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা। প্রত্যাহার হওয়া ডিবির দুই সদস্য হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলাম ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেন। পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ডিবির দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ডিবির দুই সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ওই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস), নোয়াখালী বিজয়া সেনকে দেওয়া হয়েছে। তিনি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
প্রবাসী মহিন উদ্দিনের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি দুবাই থেকে বাংলাদেশে আসেন। দুবাই থেকে দেশে আসার পথে এক প্রবাসী কিছু সোনা, একটি মুঠোফোন ও একটি ল্যাপটপ তাঁকে ঢাকায় তাঁর এক প্রতিনিধির কাছে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন। ঢাকায় যে ব্যক্তিকে ওই জিনিসগুলো পৌঁছে দেওয়ার কথা, তাঁর কাছে তাঁর (প্রবাসী মহিন) ছবি তুলে পাঠানো হয়। সে অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুই ব্যক্তি ওই ছবি দেখিয়ে জিনিসগুলো নিয়ে যান। তখন তাঁরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁকে ১০ হাজার টাকা দেন। এর কিছুদিন পর দুবাইয়ে থাকা ওই প্রবাসী তাঁর মালামাল তাঁর লোক বুঝে পাননি বলে মৌখিক অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি ওই প্রবাসীকে তাঁর মালামালগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান।
মহিন উদ্দিনের অভিযোগ, এ ঘটনার পর ৩ মার্চ রাতে নোয়াখালী জেলা ডিবির এসআই শরীফুল ইসলাম তাঁর বাড়িতে গিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গামছা দিয়ে তাঁর চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যান। পরে ডিবি কার্যালয়ে আটক রেখে তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরদিন ডিবি কার্যালয়ে কথিত একটি সালিস বসিয়ে ২০ মার্চের মধ্যে ডিবি পুলিশকে ছয় লাখ টাকা দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এর মধ্যে তাঁকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একাধিক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার পাশাপাশি ডিবি কোনো সালিস করেনি, উল্লিখিত ঘটনায় ডিবির কোনো সম্পৃক্ততা নেই লিখিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ডিবির কাছ থেকে ছাড়া পান। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: