নতজানু পররাষ্ট্রনীতি সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ: ছাত্রশিবির

রোববার লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম আঙ্গরপোতা গ্রামের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কর্তৃক গুলি করে রাফিউল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশিকে হত্যার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ মন্তব্য করে।

নতজানু পররাষ্ট্রনীতি সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ: ছাত্রশিবির

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। রোববার লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম আঙ্গরপোতা গ্রামের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কর্তৃক গুলি করে রাফিউল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশিকে হত্যার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ মন্তব্য করে।

যৌথ এক বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, যখন তখন সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশিদের হত্যা করে চলেছে বিএসএফ। আর এ ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। ২০১১ সালে কিশোরী ফেলানীকে খুনের পর কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখার নির্মম দৃশ্য বিশ্ববাসীকে কাঁদিয়েছিল। ২০২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ১৬ বছর বয়সী স্কুলছাত্র মিনহাজুল ইসলামকে হত্যার পর ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় লাশ আটকে রাখে বিএসএফ। 

‘এভাবে যখন তখন নির্বিচারে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে বিএসএফ। এসব নির্মম ও অপমানজনক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সম্প্রতি হত্যা করা হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে। এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ হত্যাকাণ্ডের পরও সরকার প্রায় নীরব ভূমিকা পালন করছে। যা এদেশের মানুষকে হত্যার জন্য ভারতকে লাইসেন্স দেয়ার শামিল।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, সীমান্তে এমন নির্বিচারে হত্যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু ভারতের সদিচ্ছার অভাব ও বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে বাংলাদেশিরা হরহামেশাই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ১৮৫ জন বাংলাদেশি বিএসএফের হাতে খুন হয়েছেন! আহত ও নির্যাতনের শিকার অসংখ্য বাংলাদেশি। ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিএসএফ প্রধান পঙ্কজ কুমার সিং বাংলাদেশে বসে দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছেন, ‘এযাবৎকালে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যারা নিহত হয়েছে, তারা সবাই অপরাধী’। 

‘এসময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ করা হয়নি। অবৈধ সরকারের নীরবতাই সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে বিএসএফকে উৎসাহিত করছে। ফলে প্রতিনিয়তই বাংলাদেশ সীমান্তে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, অপহরণ ও চুরি, ডাকাতি, দখলের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে বিএসএফ। অথচ অন্য কোনো দেশের সীমান্তে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার সাহস দেখাতে পারে না ভারত। অবৈধ সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এদেশের মানুষের জান-মাল ভারতীয় বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে।’ 

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অবৈধ সরকার তার ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের জন্য দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে হাজার হাজার টন ইলিশ ভারতে পাঠায়। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে বাংলাদেশকে অবাধে ব্যবহার করার সুযোগ দিচ্ছে সরকার। আর ভারত বাংলাদেশকে নিরপরাধ নাগরিকের লাশ উপহার দিচ্ছে। অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর ভারত থেকে জনগণের জন্য কিছু নিয়ে আসতে না পারলেও লাশ নিয়ে আসতে পারে। অবৈধ সরকারের ধারাবাহিক নীরবতা মানে হলো ভারতকে বাংলাদেশের মানুষকে হত্যার লাইসেন্স দেয়া। দেশবাসী এ নতজানু নীতি পরিহার ও সীমান্ত হত্যা বন্ধ দেখতে চায়। সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নির্বিচারে হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে। এদেশের মানুষের রক্ত এত সস্তা নয়। জান-মাল রক্ষায় প্রয়োজনে দেশের মানুষ কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজপথে নেমে আসবে।