না’গঞ্জের ফতুল্লায় কবিরাজকে গলাকেটে হত্যা

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ফতুল্লা মডেল থানার ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠ এলাকার মৃত তৈয়ুব আলী মেম্বারের বাড়ীর নীচ তলায়।

না’গঞ্জের ফতুল্লায় কবিরাজকে গলাকেটে হত্যা

প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠ এলাকায় আল আমিন ভান্ডারি (৪৮) নামের এক কবিরাজকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুবৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ফতুল্লা মডেল থানার ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠ এলাকার মৃত তৈয়ুব আলী মেম্বারের বাড়ীর নীচ তলায়। সংবাদ পেয়ে  সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) এস,এম জহিরুল হক, ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম মিয়া, পরিদর্শক(তদন্ত) তসলিম উদ্দিন, সহকারী উপ-পরিদর্শক হারেস শিকদার, মফিজুল ইসলাম সহ পিবি আই পরিদর্শন করেন।

শুক্রবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায়। নিহত আল আমিন ভান্ডারি পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর জেলার সদর থানার দক্ষিন পুকুরিয়ার হারুনুর রশীদের পুত্র। নিহত আল আমিন ভান্ডারি পেশায় একজন কবিরাজ। সে তার তৃতীয় স্ত্রী ও প্রথম সংসারের পুত্রকে নিয়ে ধর্মগঞ্জ চতলার মাঠ এলাকার মৃত তৈয়ুব আলী মেম্বারের বাড়ীর নীচ তলায় ভাড়ায় বসবাস করতো।

নিহতের ভাই আলিম শেখ জানায়, তার বড় ভাই নিহত আল আমিন ভান্ডারি বর্তমানে কবিরাজি করলে ও এক সময় জাহাজে বাবূ্র্িচ হিসেবে কাজ করতো। তিন বছর পূর্বে সে জাহাজের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে নোয়াখালি তার শ্বশুড় বাড়ী এলাকায় বসবাস করতে শুরু করে। দেড় বছর পূর্বে সে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ চতলারমাঠ এলাকায় এসে বসবাসের পাশাপাশি কবিরাজি শুরু করে। জাহাজে চাকুরি করাকালীন সময়ে একই জাহাজে কর্মরত হাফেজ মাস্টার নামের একজনের সাথে তার নিহত ভাইয়ের পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে হাফেজ মাস্টার প্রায় সময় তার ভাইয়ের নিকট আসতো এবং রাত্রি যাপন করতো।

বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে হাফেজ মাস্টার তার ভাইয়ের নিকট আসে। সাথে একটি কালো ব্যাগ ও ছিলো। তখন তার ভাই নিহত আল আমিন ভান্ডারি  স্ত্রী  ও ছেলেকে পাশের রুমে ঘুমানোর জন্য বলে। রাত চারটার দিকে নিহত আল আমিন ভান্ডারি তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ভাত নিজ রুমে দিতে বলে সাথে সেমাই রান্না করে নিয়ে আসতে বলে। রান্না করা ভাত এবং সেমাই খেয়ে আল আমিন ভান্ডারি নিজ রুমের দরজা লাগিয়ে হাফেজ মাস্টারকে নিয়ে শুয়ে পরে।

সকাল ৮টার দিকে নিহতের স্ত্রী দরজা খোলা দেখতে পেয়ে উকি মেরে দেখে নিহতের রক্তাক্ত দেহ খাটের উপর পরে রয়েছে। তিনি আরো জানান,তার ভাইয়ের সাথে থাকা হাফেজ মাস্টার চারটার পরে কোন এক সময়ে তার ভাইকে গলাকেটে জবাই করে পালিয়ে গেছে। হাফেজ মাস্টার সাথে করে নিয়ে গেছে তার নিহত ভাইয়ের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন। ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম নিহত আল আমিনের স্ত্রী রোকসানার বরাত দিয়ে জানান, নিহতের পূর্ব পরিচিত হাফেজ মাস্টার রাত দশটার দিকে বাসায় আসে।  পরে রাত একটার দিকে তাকে নিয়ে নিহতের শ্বাশুড়িকে গ্রামের বাড়ী নেয়াখালীতে যাওয়ার জন্য পঞ্চবটী বাসট্যান্ড থেকে বাসে তুলে দেয়। সেখান থেকে তারা নদীর ঘাটে যায়।

পরবর্তীতে রাত ৩টার দিকে বাসায় এসে স্ত্রীকে বলে সে অসুস্থবোধ করছে এবং মাথা ঝিমুনি দিচ্ছে। সে ভাত খেয়ে মেহমান হাফিজের জন্য খাবার নিজ রুমে স্ত্রীকে দিয়ে আসতে বলে। স্ত্রী খাবার দিয়ে এসে দরজার বাইরে সিড়িতে বসে থাকলে তাকে গালমন্দ করে শালিকার ঘরে পাঠিয়ে দেয়। পরে সে দরজা লাগিয়ে দেয়। রোকসানা আল আমিন ভান্ডারির তৃতীয় স্ত্রী। গত রমজান ঈদের পর রোকসানাকে বিয়ে করে আল আমিন। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ওসি নূরে আযম মিয়াজানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন সহ ঘটনার সাথে জড়িত খুনিকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলে তিনি জানান।