দুই দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ডাক্তাররা
প্রথম নিউজ, ঢাকা : সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা ভাতা এবং সেই ভাতা নিয়মিত দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে গিয়েছে ট্রেইনি ডাক্তারদের সংগঠন ‘পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন’। তারা জানান, দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত তাদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।
শনিবার (৮ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টায় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটি। কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, সারা দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ট্রেইনি ডাক্তার ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, ‘এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম ভাতা দেওয়া হয় আমাদের দেশের ট্রেইনি ডাক্তারদের। ভারতে এই ভাতা দেড় লাখ রুপি, পাকিস্তানে প্রায় পঁচাত্তর হাজার রুপি, আর চিকিৎসা সেবার জন্য যে সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দেওয়া হয় সে দেশে বাংলাদেশের প্রায় আড়াই লাখ টাকা ভাতা দেওয়া হয় ট্রেইনি ডাক্তারদের। কিন্তু আমাদের দেশে এটি মাত্র ২০ হাজার টাকা। আমাদের দাবি, ট্রেইনি ডাক্তারদের ভাতা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করতে হবে। যাতে দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে আমরা মোটামুটি জীবনযাপন করতে পারি। আমাদের চিকিৎসা সেবা বিশ্বমানে উন্নত হোক এটা আমরা চাচ্ছি, কিন্তু চিকিৎসকদের সরবরাহ করছি সর্বনিম্ন ভাতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিজেদের দাবি নিয়ে গত ছয় মাস ধরে আমাদের যারা অভিভাবক রয়েছেন– বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), ঢাকা মেডিক্যালসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সবাই আমাদের নৈতিকভাবে সমর্থন করেছে। কিন্তু দাবি পূরণে কোনও ধরনের আশানুরূপ পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা আজ সারা বাংলাদেশের ট্রেইনি ডাক্তাররা একযোগে কর্মবিরতিতে গিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণ করে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলমান থাকবে। প্রতিদিন নতুন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
দাবি পূরণ হলে দ্রুত রোগীদের সেবায় ফিরতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দিয়ে হাসপাতাল চালানো খুবই কষ্টকর। এতে সাধারণ মানুষ ও সেবা প্রত্যাশীদের ভোগান্তি বাড়বে। আমরা চাই না তা হোক। আমরা চাই, অধিকার নিয়ে ফিরে গিয়ে রোগীদের দ্রুত সেবা দিতে।’
আন্দোলনকারীরা জানান, সারা বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১০ হাজার ট্রেইনি ডাক্তার রয়েছেন। সবাই একযোগে এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।