ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে

বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা কয়েকগুন বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখনও ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে বের করে আনা হচ্ছে জীবিতদের।

ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে
তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়ালো

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক : তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। শুধু তুরস্কে ভূমিকম্পকবলিত ১০ প্রদেশে আহত হয়েছেন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ।
এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারে চলছে তৎপরতা। খবর সিএনএনের।
বৃহস্পতিবার রাতে তুরস্ক-সিরিয়ার সরকারি সূত্র ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত সোমবার ভোরে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্কে ১৭ হাজার ৬৭৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর সিরিয়ায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৭৭ জন। ফলে দুই দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৫১। স্মরণকালের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার গৃহহীন হওয়া লাখো মানুষের দুর্দশা বাড়ছে। সাহায্যের জন্য আরও মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত আর কাউকে উদ্ধারের আশাও ক্ষীণ হয়ে আসছে। এখনও ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে বের করে আনা হচ্ছে জীবিতদের। ঘটনার চারদিন পেরিয়ে যাওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। সময় যত গড়াচ্ছে, এই সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে আরও ক্ষীণ হচ্ছে।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা তবু আশায় বুক বেঁধে আছেন। হয়তো, অলৌকিকভাবে জীবিত বের করে আনা হবে তাদের প্রিয়জনকে। 

ওদিকে ভূ-বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূমিকম্পের ফলে আনাতোলিয় এবং আরবীয় টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যুতিরেখা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে তুরস্ক তার আগের ভৌগোলিক অবস্থান থেকে ১০ ফুট দূরে সরে গিয়েছে।  ইতালির ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কার্লো ডগলিয়োনি বলেছেন, টেকটোনিক প্লেটগুলির সঞ্চালনের কারণে তুরস্ক প্রায় ২০ ফুট পশ্চিমে সরে গেছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলছে, দ্রুতই মানুষকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের আশা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং সিরিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টাকে খুব ধীর গতির বলে সমালোচনা করেছেন অধিবাসীরা। তবে  এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত তীব্র ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলেন কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। 

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাজিয়ানতেপ সফরে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান বলেছেন, তার দেশে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৪,০১৪। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৩,০০০ মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে কমপক্ষে ৬,৪০০ ভবন। তিনি এক বছরের মধ্যে ওই অঞ্চলে তিন এবং চারতলা ভবন নির্মাণের লক্ষ্য আছে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তুরস্কের কাহরামানমারাস থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক রসুল সরদার বলছেন, ওই শহরে শত শত ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এই শহরটি সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পের উৎসস্থলের খুব কাছে। সেখানে একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন ৪০ জন অতিথি এবং ২০ জন স্টাফ। তারা এখন ধ্বংসস্তূপের নিচে। এই ৬০ জন মানুষের কারোই এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধান মেলেনি। 

তিনি উদ্ধার অভিযোন নিয়ে বলেন, একটি ভবনের ধ্বংসাবশেষের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি। দুর্ভাগ্যজনক হলো এ ভবন থেকে কেউই জীবিত বেরিয়ে আসতে পারেননি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন কিছু মৃতদেহ বের করে আনা হয়েছে। এগুলো আগুনে পুরোপুরি পুড়ে গেছে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: