ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের আহ্বান জাতিসংঘের
অনতিবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক
প্রথম নিউজ, ঢাকা : অনতিবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
ভলকার তুর্ক বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে সাংবাদিক এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন এবং অনলাইনে সমালোচনাকে স্তব্ধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন।’
‘আমি কর্তৃপক্ষকে আবারও অবিলম্বে এর ব্যবহার স্থগিত করতে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে এর বিভিন্ন বিধান ব্যাপকভাবে সংস্কার করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমার অফিস থেকে ইতোমধ্যে এর সংশোধনে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় মতামত দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান বলেন, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর কার্যকর হওয়ার এ পর্যন্ত এই আইনের অধীনে ২,০০০টিরও বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ, ২৯ মার্চ, দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলোতে কর্মরত সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে এ আইনে আটক করা হয়েছে। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তার ল্যাপটপ, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। তার জামিনের আবেদনও খারিজ করা হয়েছে।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও একজন ফটোগ্রাফারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় আরেকটি মামলা করা হয়েছে। বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট নিয়ে তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই মামলাটি করা হয়েছে।
তিনি বিবৃতিতে আরও বলেন, ফেরুয়ারিতে, ফেসবুকের একটি পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পরিতোষ সরকার নামে এক তরুণকে এই আইনে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভলকার তুর্ক বলেন, আমার অফিস ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন অ-সংজ্ঞায়িত বিধান নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, এ আইনের যথেচ্ছ বা অত্যধিক প্রয়োগের বিরুদ্ধে সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু এভাবে গ্রেফতার অব্যাহত থাকলে সেই প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়। এই আইনের এখন সঠিকভাবে সংশোধন প্রয়োজন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অভিযুক্তদের মুক্তির লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে আনা সব মুলতবি মামলা পর্যালোচনা করার জন্য একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠনেরও আহ্বান জানিয়েছেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: