টানা পাঁচদিন কেঁদেছেন নেইমার, নিতে চেয়েছিলেন অবসর
প্রথম নিউজ, স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নেইমারের সেই দুর্দান্ত গোলের কথা মনে আছে? ব্রাজিল সমর্থকরা ধরেই নিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে যাচ্ছে দল। নেইমারের গোলটা যে ছিল যোগ করা সময়ের প্রথমার্ধের একদম শেষ ভাগে।
কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল না ব্রাজিলের পাশে। ১১৭ মিনিটে ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকার ভাগ্যে তো যে কারও কপাল পুড়তে পারে। সেদিন কপাল পুড়েছিল ব্রাজিলের।
ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে ২০২২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। অথচ সেলেসাওদের সেই দলটিকে ধরা হচ্ছিল, বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার। তারকায় ঠাসা দলের একাদশ সাজাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়েছিল কোচ তিতেকে।
স্বাভাবিকভাবেই ব্রাজিলের এমন বিদায় মেনে নিতে পারেননি সমর্থকরা। খেলোয়াড়রা তো নয়ই। নেইমার আগেও কয়েকবার বলেছেন, ওই হারটা ছিল তার জীবনের অন্যতম কঠিন মুহূর্ত। এবার পিএসজি সুপারস্টার এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, টানা পাঁচদিন শুধু কেঁদেই গেছেন তিনি। এমনকি ভেবেছিলেন জাতীয় দল থেকে অবসরের কথাও।
ব্রাজিলের খ্যাতিমান সংবাদকর্মী, ইউটিউবার ও স্ট্রিমার কাসিমিরোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন নেইমার। যার বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো।
ওই সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে নেইমার বলেন, ‘সত্যি বলতে বিশ্বকাপের পর আমি আর (জাতীয় দল) ফিরতে চাইনি। কিন্তু নতুন করে আবারও ভাবতে হয়েছে। আমি তো সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত, তাই না? তাই ওই ভাবনা পুনর্বিবেচনা করে পাল্টাতে হয়েছি। বিশ্বকাপের পর আমি আর কষ্ট পেতে চাইনি। কিন্তু পরিবারকে ভুগতে দেখাটাও কষ্টকর।’
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হেরে বিদায় নেওয়ার পরের দিনগুলো সম্পর্কে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার বলেন, ‘আমি টানা পাঁচ দিন কেঁদেছি। ওভাবে স্বপ্ন চূর্ণ হওয়ায় খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। ০–০ ব্যবধানে থেকে টাইব্রেকারে ম্যাচ হারব এবং কোনো গোল করব না, সেটাও মেনে নিতে রাজি আছি; কিন্তু গোল করব, এরপর গোল হজম করে টাইব্রেকারে হারব; সেটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন।’
নেইমার যোগ করেন, ‘এটা (ক্রোয়েশিয়ার কাছে হার) আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত। আমার পাশে একজন কাঁদছিল, অন্যপাশে আরেকজন। গোটা দলের পরিবেশ খুব ভারি হয়ে উঠেছিল। আমি সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আর কখনো যেতে চাই না।’
কাতার বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে অ্যাঙ্কেলের চোটে পড়েছিলেন নেইমার। পায়ে ব্যথা নিয়েই পরের ম্যাচগুলো খেলেছিলেন, জানালেন এই ফরোয়ার্ড, ‘ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে সপ্তাহ। চোট পেয়েছিলাম। কেউ জানতো না, অসুস্থও হয়ে পড়েছিলাম। সারা দিন বিছানায় থেকে চিকিৎসা করিয়েছি। বিছানার বাইরে শুধু পা’টাই থাকত। ফিজিওথেরাপিস্ট সর্বস্ব দিয়ে চিকিৎসা করেছে। তখন মারকুইনহস (জাতীয় দলের সতীর্থ) আমার পাশে ছিল, সে সঙ্গ দিয়েছে।’
চোট তার নিত্যসঙ্গী হয়েই আছে। ক্লাব পিএসজির ম্যাচে চোট পেয়ে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ছিটকে পড়েছিলেন নেইমার। গত মার্চে করিয়েছেন অস্ত্রোপচার। এরপর দীর্ঘ বিরতি। অবশেষে অনুশীলনে ফিরেছেন পিএসজি সুপারস্টার।