‘টাকার কথা কাউকে বললে আবারও তোকে আসামি করব’
বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ও চকরিয়া থানার ওসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ডুলাহাজারা পূর্ব মাইজপাড়ার মৃত আবুল কাসেমের ছেলে আবু ছৈয়দ আব্রাহাম।
প্রথম নিউজ, কক্সবাজার : কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিরপরাধ লোকজনদের মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহাদাত হোসেন। বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ও চকরিয়া থানার ওসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ডুলাহাজারা পূর্ব মাইজপাড়ার মৃত আবুল কাসেমের ছেলে আবু ছৈয়দ আব্রাহাম। অভিযোগে শাহাদাত ছাড়াও দুই কনস্টেবল এবং পুলিশের সোর্স জিয়াবুল করিমের নামও উলে্লখ করা হয়েছে।
আবু ছৈয়দ আব্রাহাম জানান, ২৫ মে রংমহল এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রিকেট খেলা দেখার সময় রাত ১০টার দিকে চকরিয়া থানার এএসআই শাহাদাত হোসেন, কনস্টেবল আনিসুর রহমান ও নয়ন চন্দ্র মজুমদার এবং পুলিশের সোর্স জিয়াবুল করিম সেখানে এসে আব্রাহামকে মারধর করে সিএনজিতে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ফাঁসিয়াখালী হাঁসের দিঘি পৌঁছেছে আব্রাহামের মাকে এএসআই ফোন করে তাকে ছেড়ে দিতে নগদ এক লাখ টাকা দাবি করেন।
টাকা না দিলে তার ছেলেকে ডাকাতির মামলায় চালান করে দেওয়ার ভয় দেখান। মা মনোয়ারা বেগম পরে এএসআই শাহাদাত হোসেনের হাতেপায়ে ধরে ২০ হাজার টাকায় রাজি করিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। আব্রাহাম আরও বলেন, টাকা নেওয়ার পরে এএসআই শাহাদাত ও উপস্থিত পুলিশ সদস্য ও সোর্স জিয়াবুল ভয় দেখিয়ে তাদের শেখানো কথামতো একটি ভিডিও ধারণ করে। এএসআই তখন আমাদেরকে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি যদি কাউকে বলি তাহলে আমাকে আবারও ধরে বিভিন্ন মামলায় আসামি করে চালান করে দেবেন।
ফাঁসিয়াখালী ইউপির সদস্য সাজেদা বেগম বলেন, পুকপুকুরিয়ার গুরা মিয়ার ছেলে নিরীহ নাছির উদ্দিনকে লামার এক ব্যক্তির গ্রেফতারি পরোয়ানায় শুধু নামের মিল দেখিয়ে হাতকড়া পরিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করে না পেয়ে এএসআই শাহাদাত আদালতে সোপর্দ করেছেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত যাচাই করে নাছির উদ্দিনকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু নঈম রমি বলেন, এএসআই শাহাদাত হোসেন সড়কে দায়িত্ব পালনের সময় প্রতিদিন গাড়ি ও নিরপরাধ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে। এমনকি সর্বনম্নি ৫০ টাকা পর্যন্তও তিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আদায় করেন। তার বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে কাকারা, মাঝেরফাড়ি, পাহাড়তলী, বাদশারটেক, সুরাজপুর-মানিকপুর ও পার্বত্য লামার ইয়াংছাগামী পথচারীদের।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, এএসআই শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বাধীন সড়কে দায়িত্বরত পুলিশ টিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) এসএম রকীব উর রাজা যুগান্তরকে বলেন, থানার অপারেশন অফিসার মফিজুরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম বিষয়টি তদন্ত করছে। সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।