জাবিতে অজ্ঞান পার্টির টর্চার সেল, নেপথ্যে ছাত্রলীগ নেতা
গত ৮ই ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর এক যুবককে অচেতন করে এই রুমে টর্চার করে নগদ ৪০ হাজার ও বিকাশে ৫ হাজার টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের ২১৪ (এ) নং রুমটি অজ্ঞান পার্টির টর্চার সেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। গত ৮ই ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর এক যুবককে অচেতন করে এই রুমে টর্চার করে নগদ ৪০ হাজার ও বিকাশে ৫ হাজার টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। পরে রাত ১২টায় হল প্রশাসন অভিযান চালিয়ে রুম থেকে একটি লোহার পাইপ, চাকু, বিভিন্ন ইনজেকশন ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনের পরিচয় শনাক্ত করেতে পেরেছে হল প্রশাসন। অভিযুক্ত ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অসিত পাল। তিনি ২১৪ (এ) নং রুমের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী ও হল সংলগ্ন বিকাশের এজেন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের সময় একাধিক ব্যক্তি এই নেতাকে শনাক্ত করেন।
ভুক্তভোগীর নাম ওয়ালিউল্যাহ (৩২)। তিনি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে, খিলগাঁও এলাকায় চলন্ত বাসে করে বিকাল ৪টার দিকে সদরঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। পরে আর কিছু মনে নেই তার। রাত ৯টায় নিজেকে সালাম-বরকত হলের ২১৪ (এ) নম্বর কক্ষে আবিষ্কার করেন। তিনি বলেন বলেন, ওই রুমে তারা ৪ জন ছিল। শুরুতে তারা আমাকে ১০ লাখ টাকা দিতে বলে। টাকা দিতে না পারায় তারা আমাকে চাকু, লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করে। পরে আমার নগদ ৪০ হাজার টাকা ও বাড়ি থেকে ৫ হাজার টাকা বিকাশে আদায় করে তারা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হল সংলগ্ন এলাকা থেকে ভুক্তভোগীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে ঘটনাটির সম্পর্কে জানাজানি হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক ও শহীদ সালাম বরকত হল প্রভোস্টের উপস্থিতিতে ঘটনাটির প্রাথমিক তদন্তের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এতে ঘটনার প্রাথমিক সত্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানান হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সুকল্যাণ কুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগীর যাওয়ার কথা লক্ষ্মীপুর। তাকে ঘটনাক্রমে অজ্ঞান করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। আমরা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জেনেছি তার কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে অপরাধীরা। যদিও ঘটনাটির সঙ্গে একজন শিক্ষার্থীর প্রাথমিক সংশ্লিষ্টতা শনাক্ত করা গেছে। তবুও ওই শিক্ষার্থীর বক্তব্য না পাওয়ায় এবং বাকি তিনজন চিহ্নিত না হওয়ায় আমরা পুরোপুরি তদন্ত না করে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।
ঘটনার পর অভিযুক্ত অসিত পাল গা-ঢাকা দিয়েছে। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নূরুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: