জুতো পরা নিষিদ্ধ, খালি পায়েই চলেন গ্রামের সবাই! এভাবেই চলছে ৩০০ বছর

দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যের ভেল্লাগাভি গ্রামটি গহীন অরণ্যের একটি দুর্গম অঞ্চলে অবস্থান করছে।

জুতো পরা নিষিদ্ধ, খালি পায়েই চলেন গ্রামের সবাই! এভাবেই চলছে ৩০০ বছর
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: কত না আজব ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে এই ভারতে! ভারতের এমন একটি গ্রাম রয়েছে, যেখানে জুতো পরা নিষিদ্ধ। গ্রামের কোনো মানুষ জুতো পরে না। জুতো না পরেই তাঁরা দিনের পর দিন অতিবাহিত করে দেন। কিন্তু কেন এই রীতি? তার নেপথ্যে রয়েছে এক চমকপ্রদ কাহিনি। সাধারণত মানুষ জুতো পরে কেন? ধুলো-বালি থেকে রক্ষা পাওয়া বা পা-কে সুরক্ষিত রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা। রবীন্দ্রনাথের 'জুতো আবিষ্কারে'ই সেই কারণ লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু এমন একটি গ্রামের কথা এই প্রতিবেদনে আমরা তুলে ধরতে চাইছি, যেখানে জুতো পরাই নিষিদ্ধ।
দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যের ভেল্লাগাভি গ্রামটি গহীন অরণ্যের একটি দুর্গম অঞ্চলে অবস্থান করছে। গ্রামে প্রায় ১০০ পরিবারের বাস। ছবির মতো সুন্দর গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তো আছেই, এ গ্রামের ভূমিও বড়ই পবিত্র। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম নয়। ফলে পর্যটকরা খুবই কম যান এই গ্রামে। ফলে যে রীতি চলে আসছে তা রক্ষা করাও সহজ হয়েছে ভেল্লাগাভি গ্রামে। আর পর্যটকরা গেলেও এই গ্রামে পবিত্র হয়েই যান। তাঁরা জুতো পরেন না। খালি পায়ে দুর্গম রাস্তা অতিক্রম করতে মনেও স্বাচ্ছন্দ্যও প্রত্যেকের। গ্রামে প্রবেশের আগে লেখা রয়েছে- দয়া করে জুয়ো খুলে প্রবেশ করুন।

গ্রামটির প্রবেশদ্বারে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা রয়েছে এই বিজ্ঞপ্তি। গ্রামে ঢুকতেই এই বিজ্ঞপ্তি দেখেই প্রশ্ন জাগবে, কেন এমন লেখা রয়েছে? তবে কি কোনো দেবগৃহ বা মন্দিরে প্রবেশ করতে চলেছেন তাঁরা। না কোনো দেবগৃহ বা মন্দিরে তাঁরা প্রবেশ করছেন না, প্রবেশ করছেন গ্রামে!

আর এই নিষেধাজ্ঞা গভীর বিশ্বাসের সঙ্গে মেনে আসছেন গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামের ঠিকানা তামিলনাড়ুতে। তামিলনাড়ুর ভেল্লাগিভি গ্রামের এই জুতো পরা নিষিদ্ধের কাহিনি বেশ চমকপ্রদও। কেউই এখানে জুতো বা স্যান্ডেল কিছুই পরেন না এই ফ্যাশনের যুগে। তাহলে কেন জুতো খুলে প্রবেশ করার কথা ফলাও করে লেখা রয়েছে? আসলে পুরো গ্রামটিকেই মন্দির বা দেবস্থান বলে মনে করেন গ্রামবাসীরা। যেমন দেবস্থানে জুতো পরে প্রবেশ নিষিদ্ধ, তেমনই এ গ্রামেও জুতো পরে প্রবেশাধিকার নেই কারো। গ্রামের কোনো মানুষই এখানে জুতো পরেন না। 
গ্রামটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। এখানে সবাই খালি পায়ে চলে। এ গ্রামে কোনো রাস্তা, স্কুল-কলেজ বা হাসপাতাল নেই। এ গ্রামে মাত্র একটি মুদি দোকাল আর একটি চায়ের দোকান রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ভেল্লাগাভি গ্রামের মানুষকে যেতে হয় পাশের গ্রাম কোডাইকানাল গ্রামে। এভাবেই পবিত্রতা বজায় রেখে চলেছে তামিলনাড়ুর গ্রাম।