জি-২০ সম্মেলনে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করবেন না বাইডেন

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী গ্রুপ অব টোয়েন্টি বা জি-২০ সম্মেলন আগামী মাসে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে

 জি-২০ সম্মেলনে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করবেন না বাইডেন
 জি-২০ সম্মেলনে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করবেন না বাইডেন-প্রথম নিউজ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী গ্রুপ অব টোয়েন্টি বা জি-২০ সম্মেলন আগামী মাসে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। অন্য অনেক বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সম্মেলনে অংশ নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এছাড়া থাকবেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানও।

তবে একইসময়ে একই সম্মেলনে উপস্থিত থাকলেও সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করার কোনো পরিকল্পনা নেই বাইডেনের। জ্যেষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রোববার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মাসে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেখা করার ‘কোনো পরিকল্পনা নেই’ বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তা। মূলত তেল উৎপাদন কমানো নিয়ে ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় এই অবস্থান নিয়েছেন বাইডেন।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান রোববার বলেছেন, তেল উৎপাদন কমানোর বিষয়ে সৌদি আরবকে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে এবং মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তার পরিবর্তনের বিকল্পগুলো অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ‘পদ্ধতিগতভাবে’ কাজ করবেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’এ কথা বলার সময় সুলিভান বলেন, মার্কিন-সৌদি সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন আসন্ন নয়। তবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক বাইডেন পুনরায় মূল্যায়ন করছেন।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন দ্রুততার সঙ্গে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন না। তিনি পদ্ধতিগতভাবে, কৌশলগতভাবে কাজ করবেন এবং তিনি উভয় দলের সদস্যদের সাথে পরামর্শ করার জন্য এবং কংগ্রেসের কাছে ফিরে আসার সুযোগ পেতে নিজের সময় নেবেন যাতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সাথে বসে হাতে থাকা বিকল্পগুলোর মাধ্যমে কাজ করতে পারেন।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, তেল উৎপাদন কমানোকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। প্রায় আট মাস ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তকে সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে এবং রাশিয়ার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও পশ্চিমা দেশগুলোর সন্দেহ বাড়ছে।

এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনঃমূল্যায়ন করছেন বলে আগেই খবর বের হয়েছিল। মূলত ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র তেল উৎপাদন বাড়ানোর চাহিদা জানালেও সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন তেল-উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

মার্কিন মিত্র হলেও রিয়াদের এই সিদ্ধান্ত কার্যত রাশিয়ার পাশে থাকার সমান। এতে করে বাইডেন প্রশাসনে ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং সর্বশেষ সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রেসিডেন্ট বাইডেন পুনঃমূল্যায়ন করছেন বলে গত সপ্তাহে জানায় হোয়াইট হাউস।

উল্লেখ্য, তেল-উৎপাদনকারী শীর্ষ দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে সম্প্রতি ঐকমত্যে পৌঁছায়। যা ২০২০ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। এছাড়া ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদান কমানোর এই হার বৈশ্বিক সরবরাহের প্রায় ২ শতাংশের সমান।

এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এতে করে ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য আরও বেশি অর্থ আয় করতে পারবে রাশিয়া।

তবে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে সৌদি রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে’ এই অভিযোগে তিনি ‘বিস্মিত’ হয়েছেন। প্রিন্স খালিদ বিন সালমান বলেছেন, ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্তটি সর্বসম্মতভাবে এবং সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক কারণে নেওয়া হয়েছিল।

বাদশাহ সালমানের এই ছেলে টুইটারে লিখেছেন, ‘এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগগুলো ইউক্রেন সরকারের কাছ থেকে আসেনি।’

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom