ছেলেকে নিয়ে কিশোরগঞ্জে কর্মচারীর বাড়িতে বেড়াতে এলেন সৌদি নাগরিক

তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌঁছান তারা।

ছেলেকে নিয়ে কিশোরগঞ্জে কর্মচারীর বাড়িতে বেড়াতে এলেন সৌদি নাগরিক

প্রথম নিউজ, কিশোরগঞ্জ: সৌদি আরবের নাগরিক আহাম্মদ হলিবি (৬০)। তার বাড়িতে কাজ করেন কিশোরগঞ্জের তিন ভাই। সেখানে কাজ করার সুবাদে হলিবি পরিবারের সদস্যদের মন জয় করে নিয়েছেন তারা। এ সম্পর্কের টানে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছেন তাদের মালিক আহাম্মদ হলিবি। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ছেলে আব্দুল লিল হলিবিকে (৪৫)।

তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌঁছান তারা। তারা সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের আল হাসার খালিদিয়া এলাকার অধিবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর নয়াপাড়া এলাকার মৃত চান মিয়ার তিন ছেলে খাইরুল ইসলাম (৪০), আব্দুল হামিদ (৩৫) ও সারোয়ার হোসেন সাহিদ (৩১)। খাইরুল ২০ বছর আর ছোট দুই ভাই হামিদ ও সারোয়ার সাত বছর আগে সৌদি আরবে যান। সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের আল হাসার খালিদিয়া এলাকার শামীম আহাম্মদ হলিবির পরিবারের কৃষিকাজ করেন খাইরুল ও হামিদ।সারোয়ার গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত। সেখানে কাজ করার সুবাদে মালিকদের সঙ্গে তাদের তিন ভাইয়ের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের টানে মঙ্গলবার তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন সৌদি নাগরিক আহাম্মদ হলিবি ও তার ছেলে আব্দুল লিল হলিবি।

আব্দুল হামিদ এক সপ্তাহ আগে দেশে এসেছেন। মালিক ও ছেলের সঙ্গে দেশে এসেছেন খাইরুল। সৌদিতে রয়ে গেছেন সারোয়ার। মঙ্গলবার ভোরে দেশে এলে বিমানবন্দর থেকে হামিদ তাদের বরণ করেন। পরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে হোসেনপুর সদরের ঢেঁকিয়া খেলার মাঠে আসেন। সেখান থেকে মাইক্রোবাসে করে তারা সাহেবের চর নয়াপাড়া এলাকায় যান।

 সৌদি আরবের দুই নাগরিককে দেখতে এলাকায় ভিড় করছেন শিশু, নারী, পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। প্রবাসী খাইরুল ও হামিদ আরবিতে কথা বলছেন মালিক ও তার ছেলের সঙ্গে। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলেও এ দুজন সহযোগিতা করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, সৌদি আরবের দুই নাগরিককে দেখতে এলাকায় ভিড় করছেন শিশু, নারী, পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। প্রবাসী খাইরুল ও হামিদ আরবিতে কথা বলছেন মালিক ও তার ছেলের সঙ্গে। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলেও এ দুজন সহযোগিতা করছেন।

শামীম আহাম্মদ হলিবির ছেলে আব্দুল লিল হলিবি বলেন, ‘তাদের তিন ভাইকে আমরা নিজেদের পরিবারের সদস্যদের মতোই মনে করি। আমরা যে খাবার খাই তাদেকেও সেই খাবার দেই। তারাও আমাদের অনেক ভালোবাসে। তাই তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের দেখেতে বাংলাদেশে ছুটে এসেছি। দেখে ভালোই লাগছে।’

তিন প্রবাসীর খালু আমের উদ্দিন বলেন, ‘আহাম্মদ হলিবি অনেক ভালো মানুষ। তার পরিবারে আমি ২৩ বছর কাজ করেছি। পরে খাইরুলকে সেখানে নিয়ে যাই। এখন তিনি আমাদের দেশে এসেছেন, অনেক ভালো লাগছে।’

প্রবাসীদের বোন রুনা আক্তার বলেন, ‘আমার তিন ভাইয়ের কাজের সুবাদে তাদের মালিক ও মালিকের ছেলে এমন অজপাড়াগাঁয়ে গরিবের বাড়িতে বেড়াতে আসবেন, আমার কল্পনাতেও ছিল না। তারা আসবে প্রথম যখন শুনেছি তখন মনে করেছি ঠাট্টা করছে। সত্যিই তারা এসেছেন। আমাদের অনেক ভালো লাগছে। আমরা গর্ববোধ করছি।’

এ বিষয়ে প্রবাসী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘মালিক ও তার ছেলে অনেক দিন ধরেই বলছিলেন আমাদের দেশে আসবেন। তারা বাংলাদেশে এসে মুগ্ধ হয়েছেন।’