চীন হবে বিশ্বের এক নম্বর দেশ, পিছিয়ে পড়বে ভারত: টোকিও সম্মেলনে ড. মাহাথির

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: চীন বিশ্বের এক নম্বর দেশ হবে। যুক্তরাষ্ট্র ক্রমশ যে অন্তর্কেন্দ্রীক হচ্ছে তার প্রেক্ষিতে তারা চীনের উত্থান থামাতে সক্ষম হবে না। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে পেরে উঠবে না ভারত। চীন সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার ও ৯৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। শুক্রবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে ফিউচার অব এশিয়া কনফারেন্সে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিক্কি এশিয়া। ড. মাহাথির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এই ধারণায় অসন্তুষ্ট যে- যুক্তরাষ্ট্রকে চীন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি সময় ধরে উন্নত অবস্থায় অবস্থান করছে চীন। অল্প কিছু সভ্যতা যা দীর্ঘ সময় টিকে আছে, তার অন্যতম চীন।
ড. মাহাথির বলেন, আমি মনে করি চীনকে খুব সহজে পরাজিত করতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। আমার মনে হয় না যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে পুনরুদ্ধার করে বিশ্বে এক নম্বর হবে আবার। চীনকে দেখে মনে হচ্ছে তারা বিশ্বের এক নম্বর দেশ হতে চলেছে। ওই কনফারেন্সে ড. মাহাথির মোহাম্মদ আরও বলেন, কথিত পারস্পরিক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে শত্রু বানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বিশ্বাস করেন এই শুল্ক আরোপ অন্যদের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রেরই বেশি ক্ষতি করবে। কারণ তারা মাইক্রোচিপসসহ বেশির ভাগ আমদানিপণ্যের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই অর্থনীতির দেশে জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে। শুল্ক কমানো বা প্রত্যাহারের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতার জন্য যখন অনেক দেশ চেষ্টা করছে, তখন ড. মাহাথির বলেন, শুল্ক তুলে নেয়ার জন্য ট্রাম্পকে আমি তিন মাস সময় দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, প্রায় আট দশকব্যাপী রাজনীতি করা ড. মাহাথির প্রায়ই পশ্চিমাদের সমালোচনা করেন। উন্নয়নশীল দেশগুলো এবং আন্তঃএশিয়ান সহযোগিতাকে বাড়ানোর পরামর্শ দেন। চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য তিনি আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন। ড. মাহাথির বলেন চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যে দ্বন্দ্ব যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভাল। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে তাইওয়ান। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে সমঝোতামূলক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। তারা ইঙ্গিত দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি আরও অস্ত্র কিনতে আগ্রহী।
মাহাথির বলেন, যদি উত্তেজনা না থাকতো, তাহলে স্পর্শকাতর অস্ত্র বিক্রি করতে সক্ষম হতো না যুক্তরাষ্ট্র। আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনকে উস্কানি না দেয় তাহলে তাইওয়ান পরিস্থিতি আগে যেমন ছিল তেমনই থাকতো। কোনো উত্তেজনা দেখা দিতো না।
৯৯ বছর বয়সী এই রাজনীতিক এশিয়ার আরেক উদীয়মান সুপারপাওয়ার ভারত নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, চীন যেভাবে বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে সেই একইভাবে ভারত চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে না। ড. মাহাথির বলেন, বাকি বিশ্বে চীন যে মনোভাব দেখাচ্ছে, আমি মনে করি ভারত সেটা করতে পারছে না। ভারত হলো বহু জাতি ও ধর্মের দেশ। চীনের মতো আচরণ ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, ভারতে একক কোনো সরকার (সিঙ্গেল গভর্নমেন্ট) নেই, যারা বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছাড়া পুরো ভারতকে শাসন করবে।