গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : গাজায় পুনরায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সম্প্রতি কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসরাইলের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের এক টিম। এই বৈঠকের পরপরই গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে গণমাধ্যমটি। সূত্র জানিয়েছে আগামী সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি আলোচনা শুরুর জোর তৎপরতা চালাচ্ছে কাতার। এতে কাতারের সঙ্গে অংশ নেবে মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
এর আগে ইসরাইলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। ওই প্রতিবেদনে চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির আলোচনার কথা প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু হামাস জানিয়েছে ইসরাইলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি।
শুক্রবার রাফায় অবিলম্বে হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। তবে এই নির্দেশনাকে পুরোপুরি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শনিবার ইসরাইলি বাহিনীর বিভিন্ন হামলায় গাজায় অন্তত ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
গত সাতমাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ। যাদের অর্ধেকের বেশি শিশু ও নারী। গাজা থেকে হামাস নির্মূলের নামে এসব বেসামরিক মানুষ হত্যা করেছে তেল আবিব। উপত্যকাটিতে ইসরাইল ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে এমন অভিযোগ এনে জাতিসংঘের আদালতে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের মামলার ভিত্তিতে শুক্রবার ওই রায় দেন আদালত। বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো বারবার তেল আবিবকে সতর্ক করেছে এই বলে যে গাজায় তাদের হামলার ফলে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। তবে এসব সতর্কতা না মেনে ইসরাইলি বাহিনী গাজাকে পুরোপুরি ধ্বংসাত্মক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এরমধ্যে বেশ কয়েকবার গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা করেছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। তবে তাতে তেমন কোনো লাভ হয়নি।
ইসরাইলের দাবি ছিল হামাসের হাতে বন্দি হওয়া তাদের সকল জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে হামাসের দাবি গাজায় ইসরাইলের চিরস্থায়ী দখলনীতির অবসান এবং তাদের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি। হামাস-ইসরাইলের এই দাবিতে দুদলের কেউই পুরোপুরি একমত না হওয়ায় এর আগের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতির আলোচনা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে সম্প্রতি রাফা অঞ্চলে পূর্ণ মাত্রার হামলার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে ইউরোপের অনেক দেশ। এছাড়া এরইমধ্যে স্পেন, নরওয়ে ও নেদারল্যন্ডস ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ায় মিত্র হারানোর শঙ্কায় পড়েছে ইসরাইল। এই পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে তেল আবিব।