কাউন্সিল সভায় চবি অধ্যাপককে ‘গলাটিপে’ ধরার হুমকি ডিনের
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৪তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, চট্রগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় অধ্যাপক ড. গোলাম কবিরকে ‘গলাটিপে’ ধরার হুমকি দিয়েছেন কলা অনুষদের ডিন ড. মাহবুবুল হক। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৪তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ ঘটনা ঘটে। ড. গোলাম কবির চবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক।
ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষক জানান, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় একটি এজেন্ডা নিয়ে মতামত দিচ্ছিলেন অধ্যাপক ড. গোলাম কবির। এ সময় হঠাৎ রেগে যান ড. মাহবুবুল হক। তিনি অধ্যাপক গোলাম কবিরকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার পাশাপাশি গলা টিপে দেওয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. গোলাম কবির বলেন, আমি অনুমতি নিয়ে স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগে ভর্তির বিষয়ে মতামত দিচ্ছিলাম। আমি বলেছি, জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের লিখিত পরীক্ষা ছাড়া কীভাবে ভর্তি করানো যায়? আমার প্রস্তাব সমর্থন করে উপাচার্য বলেন, আপনি স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন, তাই বুঝেছেন। কিন্তু উনি (ড. মাহবুবুল হক) বিষয়টি বুঝছেন না। এরপর হঠাৎ তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন ডিন মাহবুব। তিনি আমাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতে থাকেন। একপর্যায়ে আমাকে গলা টিপে ধরবেন বলে তেড়ে আসেন। উপস্থিত ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিনসহ অন্যান্য শিক্ষকরা তাকে না থামালে আমি মারধরের শিকার হতাম।
ড. গোলাম কবির আরও বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। ১০ বছর ধরে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য। ২ বছর সিন্ডিকেট সদস্য ছিলাম। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। উনি আমার ২ বছরের সিনিয়র হতে পারেন। আমি মতামত দিয়েছি। সেটি তার পছন্দ নাও হতে পারত। উনি বিনয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করবেন। এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু তা না করে উনি আমার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তাতে আমি সত্যিই আতঙ্কিত। বিষয়টি নিয়ে আমি উপাচার্য এবং শিক্ষক সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কলা অনুষদের ডিন ড. মাহবুবুল হককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে সেলফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সভায় উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষক বলেন, দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক। একজন সিনিয়র শিক্ষকের দিকে আরেকজন মারতে যাওয়া কোনোভাবে উচিত হয়নি। এটি অসদাচরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। না হয় আরেকদিন আরেকজন তার অন্যায় আচরণের শিকার হবেন।