উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে উঠেছে, এটা আমরা বলতে পারি।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: উন্নয়নশীল দেশের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, আমরা সেটা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, এগিয়ে যাচ্ছি।
আজ বুধবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ প্রদান এবং মহিলা কর্মজীবী হোস্টেলসহ আটটি নব নির্মিত স্থাপনা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে উঠেছে, এটা আমরা বলতে পারি। তিনি বলেন, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ২০০৮ সালে যে লক্ষ্য স্থির করেছি, সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। তবে উন্নয়নশীল দেশের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, আমরা সেটা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল। আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পে সবাইকে আশ্রয় দিবো। যাদের জমি আছে তাদেরও ঘর করে দিচ্ছি। চরাঞ্চলে শুধু টিনের ঘর করে দিবো, যাতে নদী ভাঙন দেখা দিলে সরিয়ে আনা যায়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু ঘর করে দিচ্ছি। মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে আওয়ামী লীগ সরকার সবই করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সংকটে প্রতিটি কলকারখানা বা প্রতিষ্ঠানে মালিক ও শ্রমিক যেন ঠিকমত কাজ করতে পারেন সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। করোনা সংকটেও উৎপাদন চলমান রাখায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। ভর্তুকি সুবিধাসহ কলকারখানাকে বিভিন্ন সুবিধা আমরা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আগে নারীরা ন্যায্য পাওনা পেতেন না। আমরা ক্ষমতায় এসে নারীদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। তারা যাতে সুন্দরভাবে নিরাপদে থাকতে পারেন সেজন্য শ্রমজীবী হোস্টেল করা হয়েছে। আমরা নারীদের নিরাপদ কর্মক্ষেত্রের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক-মালিকদের একটা সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। মালিকদের যেমন শ্রমিকদের স্বার্থটা দেখতে হবে, কারণ তাদের শ্রমেই এই বিশাল কলকারখানা গড়ে উঠেছে। আবার শ্রমিকদেরও এটা মনে রাখতে হবে এখান থেকেই তাদের নিজ ও পরিবারের আয়ের যোগান হয়। এজন্য শ্রমিকদের কারখানার প্রতি যত্নবান হতে হবে; কারখানা ঠিকভাবে যেন চলে, উৎপাদন যেন বাড়ে।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। এদেশের শিল্প কলখানা যা গড়ে উঠেছে, এগুলো তারই সুযোগ করে দেওয়া। মা যেমন রুগ্ন সন্তানকে যত্ন করে সুস্থ করে তোলেন, সেরকম স্বাধীনতার পর বন্ধ কল কারখানা চালুর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বেসরকারিভাবে কলকারখানা গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি।
ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ সালে যে ট্রেড ইউনিয়ন জিয়াউর রহমান বাতিল করেছিলেন, ৮৪ সালে আমরা সেটা আদায় করে নিয়েছিলাম। এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার আমরাই দিয়েছি, আবার আমরাই আদায় করে দিয়েছি।
এদিন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রম অধিদপ্তরের শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল ও শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের আটটি নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া ৩০ প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৩০ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পরে মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেলসহ নবনির্মিত আটটি স্থাপনার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
স্থাপনাগুলো হলো- নারায়ণগঞ্জে বন্দর মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেল ও পাঁচ শয্যার হাসপাতাল সুবিধাসহ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চট্টগ্রামে ছয় তলাবিশিষ্ট শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন দপ্তর, নারায়ণগঞ্জে পাঁচ তলাবিশিষ্ট আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর, বগুড়ায় তিন তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র ও আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর, গাইবান্ধায় তিন তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র।
এছাড়াও বাগেরহাটের মোংলায় তিন তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, খুলনার রূপসায় চার তলাবিশিষ্ট শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র এবং রাঙামাটির ঘাগড়ায় শ্রম কল্যাণ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: