ঈদের যে নাটকগুলো তাদের চোখেও সেরা

প্রথম নিউজ, অনলাইন: টেলিভিশন ও ইউটিউব চ্যানেল মিলিয়ে এরই মধ্যে প্রচারিত হয়েছে কয়েক শ ঈদের নাটক-টেলিছবি। কেমন হয়েছে সেগুলো? এ সময়ের পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীরা বলেছেন তাঁদের ভালো লাগা তিনটি নাটকের কথা—দুটি সহকর্মীর, আরেকটি নিজের। এর মধ্যে চারবার এসেছে দুটি নাটকের কথা—মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘তোমাদের গল্প’ এবং হাসিব হোসাইন রাখির ‘মন দিওয়ানা’। মজার বিষয় হলো, ইউটিউব ভিউয়ের দিক থেকেও এগিয়ে এ দুটি নাটক।
সাধারণত এমনটা হয় না।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে জাকারিয়া সৌখিনের ‘মেঘবালিকা’, আশিকুর রহমানের ‘মানুষ কী বলবে?’ এবং প্রবীর রায় চৌধুরীর ‘বেস্ট ফ্রেন্ড ২.০’। দুটি করে ভোট পেয়েছে নাটক তিনটি। একটি করে ভোট পেয়েছে ‘হোসেনের গল্প’, ‘স্বপ্নের শেষ ঠিকানা’, ‘খালিদ’, ‘কাছে আসার মানুষ’, ‘বাজি’, ‘একান্নবর্তী’ ও ‘কানামাছি’।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন তারকার পছন্দের ঈদ নাটক কোনগুলো -
তাঁদের ভালো লাগা ঈদ নাটক
পারিবারিক অনুষ্ঠানের কারণে নাটক কম দেখা হয়েছে এবার। যা দেখেছি তার মধ্যে ‘খালিদ’-এর কথা বলব আগে। এর পাণ্ডুলিপি আমি পড়েছিলাম। তানিম রহমান অংশু ভাই খুব সুন্দরভাবে গল্পটাকে পর্দায় এনেছেন।
পলাশ ভাই ভিন্ন অবতারে পর্দায় এসেছেন। রোমান্টিক নাটকে বরাবরই আমার আগ্রহ।
ভালো লেগেছে মেহজাবীন আপু ও জোভান ভাইয়ার ‘বেস্ট ফ্রেন্ড ২.০’। প্রবীর দার এই নাটকের শেষের দিকে যখন অনেক বছর পর দুজনের দেখা হয়, সেখানকার একটা দৃশ্য মনে গেঁথে আছে।
নিজের অভিনীত নাটকগুলো নিয়ে খুব সাড়া পাচ্ছি, এর মধ্যে ‘তোমাদের গল্প’ নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে।
নিজেও এ কাজটা করে তৃপ্ত ছিলাম। এতজন গুণী শিল্পীর মধ্যেও দর্শক আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলছে, এটা আমার জন্য বড় পাওয়া।
এবার বেশ কিছু নাটক দেখা হয়েছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে ‘মন দিওয়ানা’। রাখি ভাই সিনেমাটিকভাবে নাটকটি বানিয়েছেন। যার জন্য বড় ক্যানভাসের মনে হয়েছে, তিনি সফলও। তৌসিফ ভাইয়া নিজেকে শতভাগ উজাড় করে দিয়েছেন।
দ্বিতীয় পছন্দের নাটক ‘তোমাদের গল্প’। ঈদে এমন পারিবারিক গল্প খুব টানে, গল্পের বিষয়বস্তুও ঈদ। তারকাবহুল এ নাটকে আলাদা করে বলব তটিনীর অভিনয়ের কথা, খুবই ভালো করেছে সে।
এখন পর্যন্ত আমার সাত-আটটি নাটক প্রচারে এসেছে। এর মধ্যে ‘কাছে আসার মানুষ’-এ অভিনয় করে বেশি ভালো লেগেছে। রাফাত মজুমদার রিংকু ভাইয়ের নাটকটির শুটিং হয়েছে শ্রীমঙ্গলে। একটা ট্যুরের আমেজ ছিল, আনন্দ নিয়ে কাজ করেছি। গল্পটাও ভীষণ ভালো।
মোস্তফা কামাল রাজ ভাইয়ের ‘তোমাদের গল্প’ ভালো লেগেছে। পারিবারিক বন্ধনের যে ব্যাপারটা দেখানো হয়েছে এটা বেশ পছন্দ হয়েছে আমার। গল্পটাও সুন্দর। জোভান, তটিনীসহ সবাই খুব ভালো অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে বলব মনিরা মিঠু আপার কথা, তাঁর অভিনয় বেশি ভালো লেগেছে।
জিয়াউল হক পলাশের ‘খালিদ’ আলোচনায় থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে আমার বেশি ভালো লেগেছে ‘হোসেনের গল্প’। ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল ভাই পরিচিত গল্পেই সুন্দর চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন। পলাশ ও পাভেল দুজনই অনবদ্য অভিনয় করেছেন।
এই ঈদে আমার ছয়টি নাটক এসেছে। একজন পরিচালকের কাছে তার সব নির্মাণই সমান। তবু বলব ‘স্বপ্নের শেষ ঠিকানা’র কথা। নাটকে জোভান ও তানজিন তিশা চাকরিজীবী দম্পতি। তাদের সন্তান না হওয়ার জটিলতা নিয়ে গল্প। প্রচারের পর থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
প্রথমেই বলব ‘মানুষ কী বলবে?’-র কথা। আশিকুর রহমান ভাইয়ের এ নাটকের প্রাথমিক পাণ্ডুলিপি পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তখনই এ নাটক নিয়ে আগ্রহী হয়েছিলাম। প্রচারের পর দেখে মনে হয়েছে, বৃথা আশা করিনি। গল্পটা সব সময়ের জন্য সত্য। সমাজের ক্ষতি না করে যদি উপার্জন করা যায়, সেটা যেভাবেই হোক তাতে কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়। তারিক আনাম খান, কেয়া পায়েল, খায়রুল বাসার—সবাই খুব ভালো করেছেন।
দ্বিতীয় পছন্দের নাটক জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ভাই ও নাজনীন নীহা অভিনীত ‘মেঘবালিকা’। দুজনই খুব ভালো করেছেন। জাকারিয়া সৌখিন ভাই সহজ-সুন্দর চিত্রনাট্যে মন জিতে নিয়েছেন।
আমার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্য থেকে বলব হাসিব হোসাইন রাখির ‘মন দিওয়ানা’র কথা। তার কারণ এই নাটকের নেপথ্যে আমিও জড়িত ছিলাম। প্রডাকশন ডিজাইন থেকে গল্প ও চিত্রনাট্য—সবখানেই অনেক সময় নিয়ে কাজ করা হয়েছে। দর্শকও দারুণভাবে গ্রহণ করেছে।
পারিবারিক গল্প আমাকে খুব টানে, মুস্তফা কামাল রাজ ভাইয়ার ‘তোমাদের গল্প’ও পারিবারিক গল্পের। ঈদের প্রথম কাজ হিসেবে এটাই দেখেছিলাম। এখানে অনেক গুণী শিল্পী অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে তটিনীর অভিনয় খুব ভালো লেগেছে। তার চঞ্চলতা আমাকে আকৃষ্ট করেছে।
দ্বিতীয়টি আমার বন্ধু হাসিব হোসাইন রাখির ‘মন দিওয়ানা’। নাটকটির নির্মাণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। তৌসিফ মাহবুবকেও একটু আলাদাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমার চারটি নাটক এসেছে ঈদে। আমি বলব ‘একান্নবর্তী’র কথা। নাটকটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জের ছিল। নিলয় আলমগীর, হিমি তো আছেনই; দিলারা জামান, তারিক আনাম খান, মনিরা মিঠু, সাবেরী আলম, চিত্রলেখা গুহর মতো গুণী শিল্পীকে নির্দেশনা দেওয়াটা খুবই কঠিন কাজ। উনারা আমাকে খুবই সহযোগিতা করেছেন।
প্রবীর রায় চৌধুরী দাদার নাটক আমার বরাবরই পছন্দের। তাঁর ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ সিরিজটা খুব জনপ্রিয়। যখনই শুনেছি নতুন গল্পে এটা আবার পর্দায় আসবে, তখন থেকেই মুখিয়ে ছিলাম। তা ছাড়া আমি মেহজাবীন আপুর গুণমুগ্ধ ভক্ত, জোভান ভাইয়াও খুব ভালো করেছেন।
তৌসিফ মাহবুব ভাইয়া ও তটিনী আপু অভিনীত ‘মন দিওয়ানা’ নাটকটাও ভালো লেগেছে। হাসিব হোসাইন রাখি ভাইয়ের এ নাটকের গল্প, নির্মাণ, অভিনয় আমাকে আকৃষ্ট করেছে।
আমার অভিনীত নাটকের মধ্যে ‘মেঘবালিকা’ নিয়ে বেশি সাড়া পেয়েছি। নাটকের চরিত্রটা আমার খুব প্রিয়, বাস্তবেও আমি এমনই। আমাকে এমন চরিত্র দেওয়ার জন্য জাকারিয়া সৌখিন ভাইকে ধন্যবাদ। আর অপূর্ব ভাই বরাবরই একজন ভালো সহশিল্পী।
‘মানুষ কী বলবে?’ ভালো লেগেছে সমসাময়িক প্লটের জন্য। এ যুগে অনেক মানুষই প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ভেঙে জীবিকা নির্বাহ করছে, কোনোটাকেই হেয় করে দেখার কিছু নেই। আশিকুর রহমান ভাই একটি বাস্তবসম্মত গল্প বেছে নিয়েছেন।
দ্বিতীয় পছন্দের নাটক তৌফিকুল ইসলামের ‘বাজি’। মুশফিক আর ফারহানের বাজি ধরার নেশা তাকে ভীষণ সাহসী করে তোলে, ব্যতিক্রমী গল্পের জন্যই ভালো লেগেছে নাটকটা।
নিজের বানানো নাটকের মধ্যে ‘কানামাছি’ ও ‘দহন’ আমার পছন্দের। একটা বেছে নিতে হলে বলব ‘কানামাছি’র কথা। সাধারণত যে ধরনের নাটক বানিয়ে থাকি, তার চেয়ে এটা বেশ আলাদা। মুশফিক ফারহান-সাফা কবির দুজনই আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন।