‘আমার স্বামীর বিএনপি করা কি অপরাধ’

রোববার সকালে যশোরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি এলাকার নুরনবীর স্ত্রী সালমা আক্তার।

‘আমার স্বামীর বিএনপি করা কি অপরাধ’

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ‘আমার স্বামী দেড় মাস ধরে কারাগারে। তার কোনো অপরাধ নেই। বিনা অপরাধে আমার স্বামীরে ঢাকা থেকে ফেরার পথে বাস থেকে নামিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। পরিবারের একমাত্র রোজগারের মানুষটি আজ কারাগারে থাকাতে আমাদের দিন চলছে না। ৬ মাসের শিশুরে নিয়ে বিপদে আছি। আমার স্বামী বিএনপি করে বলেই কি অপরাধ!’ রোববার সকালে যশোরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি এলাকার নুরনবীর স্ত্রী সালমা আক্তার।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি উপলক্ষ্যে যশোর শহরে জজ আদালতের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের নেতৃত্বে সহস্রাধিক নেতাকর্মী ও সম্প্রতি নাশকতা মামলায় কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের স্বজনেরা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। ভুক্তভোগী স্বজনেরা কেউ স্বামী, কারও বাবা বা কারও সন্তানের ছবি সংবলিত ব্যানার করে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরে বিচার দাবি করেন।

সদর উপজেলার রাজারহাট এলাকা থেকে আসা কলেজ শিক্ষার্থী নাদিরা রহমান বলেন, ‘আমার বাবা জিল্লুর রহমান স্থানীয় বিএনপি কর্মী। কোনো পদ-পদবি নেই। গত এক মাস ধরে কারাগারে। বাবা স্থানীয় একটি মোড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এ ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়েই আমাদের সংসার চলে। বাবা কারাগারে থাকাতে সে আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট ভাই ও মাকে নিয়ে আমরা এখন অসহায়।’ তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাবা দেশের মানুষের মানবাধিকার, ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন করেছেন। সেটা কি তার অপরাধ?’ যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ গফুর বলেন, মানবাধিকার বলতে দেশে কিছু অবশিষ্ট নেই। এ দেশের বিচারকরাও স্বাধীনভাবে তাদের মতামত দিতে পারে না।

যশোরের সাংবাদিক নেতা আনোয়ারুল কবীর নান্টু বলেন, দেশে মানবাধিকারের পাশাপাশি বাকস্বাধীনতাও নেই। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। একে একে অনেক গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। একটি স্বাধীন দেশে এভাবে চলতে পারে না। মানববন্ধনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে জাতিসংঘের সনদ থেকে সরকারের বেরিয়ে আসা উচিত। মানুষের কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই। বিনা বিচারে মানুষ কারাগারে মারা যাচ্ছে।