Ad0111

আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থীর আদালতে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে: আপিল বিভাগ

মানবিকতা এতটুকুই করতে পারবো, মামলাটি তাড়াতাড়ি শুনবো

আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থীর আদালতে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে: আপিল বিভাগ
ফাইল ছবি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের মন্তব্য, আইনজীবী নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও বিচারপ্রার্থীদের সরাসরি আদালতে দাঁড়ানো (মামলার শুনানি করা) ফ্যাশন হয়ে গেছে।

আজ সোমবার বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থী সরাসরি মামলার নিষ্পত্তির আবেদন করতে আদালতে হাজির হলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

এদিন আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে প্রথমেই দুই জন নারী বিচারপ্রার্থী দাঁড়িয়ে তাদের চাকরি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির জন্য সরাসরি আদালতে আবেদন করেন। তারা আদালতের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার প্রার্থনা করেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের আইনমাফিক চলতে হবে। মানবিক আবেদন করবেন সরকারের কাছে। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবো না। আমরা দেখবো আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে। মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে সরকার। কোর্টে কোনও মানবিকতা নেই। মানবিকতা এতটুকুই করতে পারবো, মামলাটি তাড়াতাড়ি শুনবো।

মামলাটি আগামীকাল (২ নভেম্বর) শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

এদিকে ওই দুই নারীর আবেদনের পরপরই আরেকজন বিচারপ্রার্থী তার আবেদন নিয়ে আদালতের সামনে হাজির হন। তিনি নিজেকে বেকার যুবক দাবি করে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে রায় পেয়েছি। মামলাটি আপিল বিভাগে অপেক্ষমাণ আছে। কিন্তু রেলওয়ে আমাদের নিয়োগ দিচ্ছে না।’

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা তো মহামুশকিল। আপনার আইনজীবী কোথায়?’ এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে এসেছেন কেন? আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে।’

প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ‘আপনার আইনজীবী কে?’ জবাবে ওই বিচারপ্রার্থী বলেন, ‘পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।’ তখন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, ‘আপনার আইনজীবী থাকতে আপনি এখানে দাঁড়াতে পারেন না।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আগামী থেকে তো দেখছি লাইন লেগে যাবে। আইনজীবী থাকলে আপনি দাঁড়াতে পারেন না। আপনার মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড যিনি আছেন তাকে দিয়ে আবেদন দেন।’

এরপর আরেকজন আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। আমি মসজিদের মোয়াজ্জিম। আমি খুবই গরিব মানুষ। আমি মানুষের যাকাত, ফেতরা নিয়ে খাই। স্যার আমার মামলার কার্যক্রম থেমে আছে। যদি দয়া করে একটু দেখতেন।’

একের পর এক এভাবে আইনজীবী ছাড়া সরাসরি কোর্টে দাঁড়ানোর ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এরপর থেকে যেসব আইনজীবীর মক্কেল সরাসরি কোর্টে এসে দাঁড়াবে আমরা তার সনদ বাতিল করে দেবো। আগামীকাল থেকে যারা দাঁড়াবে তাদের আইনজীবী থাকলে তাদের সনদ আমরা পাঁচ জন (আপিল বিভাগের বিচারপতি) মিলে বাতিল করে দেবো।’

আপনার আইনজীবী আছে কিনা আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে ওই মোয়াজ্জিম বলেন, ‘উকিল আছে। অনেক টাকা চায়।’ তখন আদালত বলে, ‘আপনি আইনজীবী না রেখে থাকলে আপনারটা শুনবো। আপনার মামলার নম্বর দিয়ে যান।’

এরপর কার্যতালিকায় থাকা মামলাগুলোর শুনানি শুরু করেন আপিল বিভাগ। গতকাল (৩১ অক্টোবর) একজন নারী বিচারপ্রার্থী আইনজীবী না থাকায় নিজ মামলা নিয়ে আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news